‘আমাদের বাবা নেই, ঈদও নেই’সাংবাদিক নাদিমের সন্তানরা বলেন বাবা ছাড়া ঈদ যে কত কষ্টের, তা শুধু হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করতে পারছি। এবারের ঈদুল আজহায় সেই কষ্টের সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। বাবাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ঈদ করতে হচ্ছে আমাদের।
সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের মেয়ে রাব্বিলাতুল জান্নাত বলেন প্রতিবার ঈদে বাবা আমাদের তিনভাইবোনের জন্য কাপড়সহ নানা জিনিসপত্র কিনে আনতো। বাবা যা কিনে আনতো তা’আমার দুই ভাইয়ের পছন্দ হতো। কিন্তু আমার নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাবা আমাকে নিয়ে বাজারে ছেড়ে দিতো আর বলতো তোমার যা ইচ্ছে কিনে নেও আমি আছি। ঈদের দিনে বাবা না থাকার কষ্টের কথা আমাদের জীবনে ঈদ নেই, কারণ আমাদের বাবা নেই। এই ঈদে বাবার কাছে কত আবদার করতাম। এইবার আমাদের আব্বুও নাই, ঈদও নাই। মার্কেটে গিয়ে বলতেন, সবচেয়ে দামি জামা বের করো আমার মেয়ের জন্য। এখন কেউ বলবে না। কেউ ঈদের আগেরদিন জিজ্ঞেস করবেনা; আর কি কি বাকি আছে, চলো কিনে নিয়ে আসি।বাবা অনেক জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যেতো। আজ বাবা নেই, আমাদেও কিছুই নেই।
ঈদের আগে আমাদের বাসা থাকত উৎসব মুখর। হত্যাকারীরা আমাদের সব আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। বাসার বিছানার ওপর নাদিমের ছবি নিয়ে বসে আছে পরিবারের সব চেয়ে ছোট ছেলে রিশাদ আব্দুল্লাহ। সে শুধু বলছে, বাবা তুমি আসো আমরা ঘুরতে যাবো। সবাই ঘুরতে যাইতেছে আমাদের নিয়ে যাও।
নিহত সাংবাদিক নাদিমের বড় ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন রিফাত বলেন, গতবার ঈদে বাবার সঙ্গে গরু কিনেছি, কোরবানি করেছি। ঈদের জামা-কাপড় কিনেছি। কিন্তু এবার ঈদে বাবা নেই। আমরা কিছুই করতে পারছি না। কোনো নতুন জামা-কাপড় কিছুই কিনতে পারিনি। আমরা অসহায়। আমাদেও জীবনে কোনো দিন আর ঈদ হবে না।
শোকে মাতম নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, ঈদ তো শেষ হয়েছে চির জীবনের জন্য। ঈদ নিয়ে আর কোনো ভাবনা নেই আমার। এখন শুধু আল্লাহর কাছে একটি প্রার্থনা করি,যারা আমার স্বামীকে হত্যা করে আমার সন্তানদের পিতৃহারা করেছে তাদের যেন মহান রাব্বুল আলামিন সুষ্ঠু বিচার করেন। এই প্রত্যাশা করি।