দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ৫ঘন্টার ব্যবধানে একইস্থানে পৃথক ৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় রহিমা বেগম (৩৭) নামের এক পিকআপ যাত্রীর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। নিহত রহিমা বেগম দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার তারাগাঁও ইউনিয়নের সাহাড়পুর গ্রামের আবদুল খালেকের স্ত্রী।
সড়ক দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে, শনিবার (১ জুলাই) ভোর থেকেই দফায় দফায় ফুলবাড়ী উপজেলার বিজিবি ক্যাম্পসংলগ্ন ডাঙাপাড়া নামক স্থানে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন দিনাজপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেবাশীষ চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন, ফুলবাড়ী সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মাদ জাফর আরিফ চৌধুরী, ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশ্রাফুল ইসলাম, বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন কুমার মহন্ত, শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছামেদুল ইসলাম প্রমুখ।
থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিজিবি ক্যাম্পসংলগ্ন ডাঙাপাড়া নামক স্থানে শনিবার (১ জুলাই) ভোর ৪টার দিকে ঠাকুরগাওগামী একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে ধাক্কা দেয়। এতে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে হেলে পড়ে। পরে সাড়ে ৪টায় ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী একটি সাদা পিকআপ (ঢাকা মেট্রো-ন-১৯-৪৭৭৩) ও ঢাকাগামী আমবাহী ট্রাকের (ঢাকা মেট্রো-ড-১১-৯৫৫৭) মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে রহিমা বেগম নামের নারীর মৃত্যু হয়। পরে আরেকটি নীল পিকআপ (ঢাকা মেট্রো-ড-১১-৭৩৭৫), (ঢাকা মেট্রো-ড ১৪-৮৫৩০) ও (ঢাকা মেট্রো-ন-১৯-৪৭৭৩) নম্বরের দুইটি পণ্যবাহী ট্রাক, হানিফ পরিবহনের একটি নৈশ্য যাত্রীবাহী বাস (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৯৫৯৪) দুর্ঘটনার শিকার হয়। পরে সকাল ৯ টায় আরো একটি নীল পিকআপ (ঢাকা মেট্রো-ড-১৪-৫৫৮৯) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্থানীয় মসজিদে ঢুকে পড়ে। আহত সকলকে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এদিকে সড়কে অতিরিক্ত বিটুমিন ব্যবহার করার করণেই দুর্ঘটনা ঘটছে এমন অভিযোগ এনে সড়কে গাছের গোলা ফেলে সড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক সংস্কারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। এতে সড়কের উভয় প্রান্তে শত শত ছোটবড় যানবাহন আটকা পড়ে। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেবাশীষ চৌধুরী উপস্থিতিতে সড়ক সংস্কার কাজ শুরুর আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় রবিউল ইসলাম ও আবদুল রহমান বলেন, সড়কটিতে অতিরিক্ত বিটুমিন ব্যবহারের ফলে সড়কটিতে কোনো পাথর নেই। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটি পিচ্ছিল হয়ে যায়। এতে প্রায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। ঈদের দিনেও সেখানে দুর্ঘটনায় একজন গর্ভবতী নারীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১ জুলাই) একদিনেই ৯টি দুর্ঘটনা। এলাকাবাসী চায় সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকেই বিভিন্ন যানবাহন ওই একইস্থানে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মরদেহসহ যানবাহনগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকাবাসী অবরোধ তুলে নেওয়ায় যানবাহন চলাচলা স্বাভাবিক হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় তাৎক্ষণিক সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।