খুলনার পাইকগাছায় লতা ইউপি’র আলোচিত চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাসকে স্থায়ী বরখাস্তের দাবীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছেন এলাকাবাসী। রোববার উপজেলা নির্বাহী কার্যালয় ও প্রেসক্লাবের সামনে দুপুর ১২টায় এলাকাবাসী মানববন্ধন করেন। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে নির্বাহী অফিসে এক স্মারকলিপি দেন। উল্লেখ, গত ২০ জুন ইউপি চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাসকে সাময়ীক বহিষ্কার করা হয়েছে। চেয়ারম্যানের একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বরখাস্তের এ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয় কে বা কারা উপজেলার ৩নং লতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ^াসের একটি আপত্তিকর ভিডিও ক্লিপ ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মত গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন থেকে এ ধরণের কর্মকা-ে জড়িত হওয়া নৈতিকতা ও ওই পদের জন্য অবমাননাকর প্রতিয়মান হওয়ায় স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (খ) (ঘ) ধারা অনুযায়ী জেলা প্রশাসক খুলনা ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন। উল্লিখিত অভিযোগে চেয়ারম্যান দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে। চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ^াস কর্তৃক সংগঠিত অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদ সহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর ৩৪(৪) (খ) (ঘ) ধারায় অপরাধ সংঘঠিত করায় উল্লিখিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ^াসকে স্বীয় পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রসঙ্গত, ওই লতা ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মৃত গুরুপদ বিশ্বাসের ছেলে কাজল কান্তি বিশ্বাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও কলের মাধ্যমে জনৈকা কিশোরীর সাথে ৩ মিনিট ১৭সেকেন্ডের ফোন সেক্সে মিলিত হন। যার একটি ভিডিও চিত্র ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে যা, ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছেও পৌছে যায় এ ভিডিও’র কপি। এনিয়ে দৈনিক ভোরের পাতায় ধারাবাহিকভাবে গুরুত্বের সাথে খবর প্রকাশ হয়। এ ভিডিওটি দ্রুত সোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাস তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে আত্মগোপণে যান। উলেখ্য, গত ৩ এপ্রিল লতা ইউনিয়নবাসী উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও ৪ এপ্রিল ইউপি চেয়ারম্যান কাজলকে বহিষ্কারসহ শাস্তির দাবীতে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেন। ৭ এপ্রিল লতা ইউনিয়নবাসী পাইকগাছা প্রেসক্লাবের সামনে ও ১২ এপ্রিল লতা ইউনিয়নে সচেতন জনগণ খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে চেয়ারম্যানের বরখাস্ত সহ শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন করে। ৩০এপ্রিল লতা ইউনিয়নবাসী চেয়ারম্যানের বহিষ্কার ও শাস্তির দাবীতে ইউনিয়নের গংগারকোনা তিন রাস্তা মোড়ে ঝাড়- মিছিল করে, যা ১২ মে যমুনা টেলিভিশনে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। সর্বশেষ স্থায়ী বরখাস্তে দাবী রোববার মানববন্ধন ও স্মরকলিপি দেন এলাকাবাসী। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, প্রজ্ঞাপনজারির পর থেকে চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ^াস সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি সুবিধা ভোগ করতে পারবেন তবে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সবধরণের কর্মকা- থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন। পরবর্তী চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের এ আদেশ বহাল থাকবে।