সরাইল বিএডিসি অফিস। কৃষকদের মতে বেহাল অবস্থা এই ইউনিটের। সমন্বয় নেই ৩ কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে। তাই দায়িত্বে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগে থাকেন সকলেই। গত সোমবার দুপুর ১২টায়ও খুলেননি অফিস। প্রধান ফটকের ভেতরের দিকে ঝুলছে তালা। ভেতরে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন আব্দুছ ছালাম নামের কর্মকর্তা। বাহিরে ঘুরছেন ঝাঁড়-দার মহররম আলী। তালা দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন সেবা গ্রহীতারা। এই অফিসের এমন চিত্র নিত্যদিনের জানালেন আশপাশের লোকজন।
সরজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, সোমবার ঘড়ির কাটায় দুপুর ১২টা। সরাইল প্রাত:বাজার এলাকায় বিএডিসি অফিসের ফটকে ভেতরের দিকে ঝুলছে তালা। দরজা জানালা সব বন্ধ। ভেতরে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন সহকারী যন্ত্রবীদ আব্দুছ ছালাম। সেবা গ্রহীতারা আসছেন। তালা দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। বাহিরে ঘুরছেন মাষ্টার রোল কর্মচারী ঝাড়-দার মো. মহররম আলী। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে অফিস ঝাঁড়- দিতে তিনবার এসেছেন। স্যারের ঘুম শেষ হচ্ছে না। আমি তো ঘুরছিই। চাবি আমার কাছেই থাকতো। ৪ মাস আগে ছাবি নিয়ে গেছেন ছালাম স্যারে। এ কথা বলে মহররম আবারও চিৎকার করে স্যারকে ডাকলেন। গ্রীলের তালা ধরে জোরে শব্দ করলেন। কোন ভাবেই ঘুম ভাঙ্গছে না স্যার আব্দুছ ছালামের। তখনও অফিসে আসেননি উপসহকারি প্রকৌশলী আসিফ মাহমুদ। সাড়ে ১২ টায় দরজা খুললেন ছালাম। লুঙ্গি গেঞ্জি পড়াবস্থায় চোখ ঘষতে ঘষতে ধমকের স্বরে বললেন, আপনারা কারা? কি চান? জি আমরা আপনার সাথে একটু কথা বলতে চাই। দাঁড়ান তালা খুলে দিচ্ছি। ভেতরে গিয়ে লুঙ্গি ছেড়ে প্যান্ট পড়ে আসলেন। দীর্ঘ সময় চেষ্টা করেও সেই তালা আর খুলতে পারলেন না ছালাম। শুধু বললেন, স্যার (সহকারী প্রকৌশলী) নেই। স্যারের নম্বরও আমার কাছে নেই। ঝাড়-দারটা ঠিকমত কাজ করে না। মহররম বলেন, ৩ হাজার টাকা সম্মানিতে কাজ করছি। এরমধ্যে গত ১৭ মাস ধরে সম্মানি পায় না। খুবই কষ্টে আছি। স্যার ঘুম থেকে বেলা করেই ওঠেন। ঝাঁড়- দিতে আসছি। চাবি নাই। তাই ঘুরছি। বিএডিসি সরাইল ইউনিটের সহকারী যন্ত্রবিদ মো: আব্দুছ ছালাম বলেন, গতকাল (রোববার দিবাগত রাতে) গভীর রাতে এসেছি। তাই ঘুম থেকে সকালে ওঠতে পারিনি। তালাটিতে চক্রান্ত করে কেউ কিছু প্রবেশ করিয়েছে। মহররমের কাছে চাবি আছে। সরাইল ইউনিটের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী আসিফ মাহমুদ বলেন, আমি ছুটিতে আছি। ১২টা নয়। অফিস তো সকাল ৯টা থেকে। ছালাম সাহেব আমাকে জানিয়েছেন তিনি অসুস্থ। অফিস কক্ষটি সামনে। এর পরে আরেকটি কক্ষ আছে সেখানে ঘুমিয়েছিলেন হয়তবা। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন বলেন, বেলা ১২টার পরও অফিস বন্ধ থাকবে কেন? আমি বিষয়টি দেখছি।