মৌলভীবাজারের জুড়ীতে আবদুল মতিন মজুমদার ওরফে কুটিমুটি (৬৭) নাম এক ব্যক্তিকে শিকল দিয় বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ দু'জনকে আটক করছে। শুক্রবার (৭ জুলাই) রাতে উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের মনতৈল গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
সরজমিনে জানা গেছে, মনতৈল গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াস মিয়ার স্ত্রী আয়া বেগমের উপর ১০ জুন মদরিছ আলীর ছেলে পুতুল মিয়ার নেতৃত্ব একদল সন্ত্রাসী দিন দুপুরে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। আয়া বেগম থানায় মামলা করেন। মামলায় আবদুল মতিন মজুমদারের ছেলে নাহিদুল ইসলামকে সাক্ষী করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে নাহিদুলকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে আসছিল আসামিরা।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টায় ইউনুছ মিয়ার ছেলে কাজল মিয়া (৩৫) বিলাল মিয়া (৩২) মদরিছ আলীর ছেলে পুতুল মিয়া (৩৫) আছির আলীর ছেলে গিয়াস মিয়া (৩৮) শাওন (২০), ইস্তিয়াক (৩৫) সহ ১০/১২ জনের একটি সক্সঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল দেশীয় দা, লাঠি-সোঠা নিয়ে আবদুল মতিনের বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে তার ছেলে নাহিদুলকে খুঁজতে থাকে। তাকে না পেয়ে সন্ত্রাসীরা তার পিতা আবদুল মতিনকে শিকল দিয়ে হাত পা বেঁধে রেখে তার ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়। আবদুল মতিন চিৎকার করলে সন্ত্রাসীদের ভয়ে তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি। এ সময় শিশু সন্তান রাফিউল ও মনি বাবাকে বাঁচাতে সন্ত্রাসীদের হাতে পায়ে ধরে তাদের মন গলাতে পারেনি। সন্ত্রাসীরা দা দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত জেনে চলে যায়।
খবর পেয়ে জুড়ী থানার এসআই ফরহাদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মুমূর্ষ অবস্থায় আবদুল মতিনকে উদ্ধার করে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল ও পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে আবদুল মতিন আশঙ্কা মুক্ত নয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় আবদুল মতিনের ছেলে নাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে কাজল মিয়াকে প্রধান আসামি করে শনিবার জুড়ী থানায় একটি মামলা (নং-২ তাং ৮,৭,২০২৩ ইং) দায়ের করে। নাহিদুল ইসলাম জানায়, তাদের প্রতিবেশী আকবর আলীর ছেলে আবদুর রাজ্জাক এ ঘটনার মুল নায়ক। তার চক্রান্তেই সন্ত্রাসীরা তার বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়েছে।
অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করা হলে হামলার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি তারা অস্বীকার করেছে।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জুডী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি কাজল মিয়া ও পুতুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে মৌলভীবাজার জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।