মাঝ রাতে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে গলায় ছুরিকাঘাতে মেহেদী হাসাান (২৪) নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। নিহত যুবক ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা মাস্টারপাড়ার হাজী মৃত সফোর আলীর ছেলে। রোববার রাত সাড়ে ১২টায় এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। হত্যাকা-ের সাথে জড়িত পুলিশ আকরাম হোসেন (৩২) নামের একজনকে আটক করেছে। হত্যাকারী আকরাম হোসেন ও ভাই সাদ্দাম একই এলাকার তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কালীঞ্জ থানাতে নিহতের মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে সাদ্দাম হোসেন ও আকরাম এর নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৮.তারিখ ৯/৭/২০২৩।
নিহত মেহেদী হাসানের স্ত্রী আকলিমা বেগম বেগম জানান, রাত সাড়ে ১২ টার দিকে রাতের খাবার খাচ্ছিল এ সময় পাশের বাসার আকরাম হোসেন তার স্বামীকে মোবাইলে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় স্বামী মেহেদী হাসান বাইরে সিগারেট কিনতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। পরে তারা জানতে পারেন, আকরাম তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে তারই ভাই সাদ্দাম মিলে মেহেদী হাসানের গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে এবং সাদ্দামের বোন ও স্ত্রী বাড়িতেই ছিল। এ সময় মেহেদী হাসান জীবন বাঁচাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তার দিকে ছুটে আসলে তারা পিছু ধাওয়া নেয়। সে সময় মেহেদী হাসান রাস্তার উপর পড়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে মারা যায়।কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিশির কুমার জানান, হাসপাতালে আনার আগেই মেহেদীর মৃত্যু হয়েছে।
মেহেদি হাসানের স্ত্রী জানায়, সাদ্দাম ও আকরামের কাছে বেশ কিছু টাকা পেত এ টাকা চাওয়া নিয়ে তাদের দুই ভায়ের সাথে গোলযোগ হলে মেহেদিকে কুপিয়ে হত্যা করে। সাদ্দাম হোসেন আবুবক্কর মকছেদ আলী মহিলা মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী হিসাবে কর্মরত ছিল। তারা দুই ভাই এলাকায় সরকারি দলের প্রভাব খাটিয়ে চলাচল করতো। মেহেদি সর্বসময় সাদ্দামের সাথে চলাচল করতো।
তবে কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তার সঠিক তথ্য কেউ দিতে পারেননি। নিহত মেহেদী হাসানের ৫ মাস বয়সী আফরা নামের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ১২ জুলাই তার মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। মেহেদি হাসানের ভিসা, পাসপোর্ট ও প্লেনের টিকিট কাটা হয়েছিল। এদিকে হত্যাকান্ডের পর হত্যাকারী পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাড়ি-ঘরে তালা মেরে রোববার রাতেই গা ঢাকা দিয়েছে। আকরাম হোসেন প্রায় ৬ মাস আগে একটি মামলায় যশোর জেলখানা বেরিয়ে এসে সাইকেল মেরামতের গ্যারেজ করেছিল।
নিহত মেহেদী হাসানের মা রাবেয়া বেগম জানান, তিনি বাড়িতে ছিলেন না। মেয়ে অসুস্থ মেয়েকে দেখতে গিয়েছিলেন। ছেলে মেহেদী হাসানের হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে তিনি বাড়িতে এসে জানাতে পারেন মোবাইলে ডেকে নিয়ে পাশের বাড়ির আকরাম ও সাদ্দাম দুই ভাই মিলে ছুরিকাঘাতে তার ছেলেকে হত্যা করেছে। ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তার দাবি করেন। রোববার বিকাল সাড়ে ৫ টায় জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মাহাবুবুর রহমান জানান, নিহত মেহেদি হাসান ও অভিযুক্ত আকরাম হোসেন সম্পর্কে বন্ধু। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মেহেদী হাসাননের গলায় মধ্যে ছুরি ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে কেন কি কারণে তাকে মারা হয়েছে তাৎক্ষনিক ভাবে তিনি তা বলতে পারেননি। আসামি আকরামকে ঝিনাইদহ হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।