খুলনা সড়ক ও জনপথ নিয়ন্ত্রিত দিঘলিয়া ভৈরব ব্রীজ সংলগ্ন নগরঘাট ফেরিঘাটের ইজারাদার কর্তৃক বিনা রশিদে অতিরিক্ত হারে টোল আদায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খুলনা সড়ক বিভাগের অধীন দিঘলিয়ার (রেলিগেট-আড়ুয়া-গাজীরহাট-তেরখাদা) সড়কের নগরঘাটা ফেরীঘাট হতে পারাপারকারী যানবাহন হতে রশিদ ছাড়া জোর পূর্বক ভাবে অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধ। উভায় পাড়ে টোলের তালিকা টানিয়ে রাখা ও ফেরিঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধ সহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগীরা গত ২৭ এপ্রিল প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ও ১৪ ই মে মাইক্রোবাস চালকরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।
ভুক্তভোগীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল (৯ জুলাই ) রোববার খুলনা জেলা পুলিশের এ সার্কেলের কার্যালয় আবেদনকারীদের ডেকে অভিযোগের শুনানি করেন সি আই ইন্সপেক্টর শমসের আহমেদ।
সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, সড়ক বিভাগ, খুলনা-এর অধীন দিঘলিয়া-(রেলিগেট)-আড়ুয়া-গাজীরহাট-তেরখাদা সড়কের নগরঘাট ফেরীঘাট হতে পারাপারকারী যানবাহনের টোল আদায়ের জন্য ২০২২-২০২৩, ২০২৩-২০২৪ ও ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের জন্য মেসার্স ফারদিন ষ্টোন বাজার নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা প্রদান করা হয়, যার প্রোপাইটর মোঃ ফিরোজ মোল্লা। ইজারা প্রাপ্তির পর থেকে ফেরীর পারাপারকৃত যানবাহন হতে রশিদ ছাড়া জোর পূর্বক অতিরিক্ত টোল আদায় করছে। টোলের রশিদ চাইলে হুমকি-ধামকি প্রদান করেন। ফেরী সহ উভয় পাড়ে টোলের তালিকা টানিয়ে রাখার নর্দেশনা থাকলেও তা দেখাযায়নি। টোলের তালিকা অনুযায়ী ভাড়া হেভী ট্রাক (বোঝাই/খালি) ১০০ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ৫০ টাকা, বড় বাস ৪৫ টাকা, মিনি ট্রাক ৩ টন পর্যন্ত লোড ধারন সক্ষম ৪০ টাকা, পাওয়ার ট্রিলার/ট্রাক্টর ৩০ টাকা, মাইক্রো বাস ২০ টাক, পিকআপ, প্রাইভেই জীপ ২০ টাকা, অটো টেম্পো, সিএনজি অটোরিকশা, অটোভ্যান ব্যাটারী চালিত ৩ চাকার যান ৫ টাকা ইজারা প্রদানকৃত সড়ক বিভাগের তালিকা অনুযায়ী ভাড়া নেওয়ার কথা থাকলেও সে নির্দেশনাকে বৃদ্ধা অঙ্গুলি দেখিয়ে ইজারাদার ফিরোজ মোল্লা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দু'বারে হেভী ট্রাক (বোঝাই/খালি) ৯০০ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ৫০০ টাকা, বড় বাস ১২০০ টাকা, মিনি ট্রাক ৩ টন পর্যন্ত লোড ধারন সক্ষম ৮০০ টাকা, পাওয়ার ট্রিলার/ট্রাক্টর ৪০০ টাকা, মাইক্রো বাস ৫০০ টাক, পিকআপ, প্রাইভেই জীপ ৪০০ টাকা, অটো টেম্পো, সিএনজি অটোরিকশা, অটোভ্যান ব্যাটারী চালিত ৩ চাকার যান ৪০ টাকা অতিরিক্ত কয়েক গুণ বেশি টাকা উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু অতিরিক্ত ফেরীর টোল উত্তোলন নয় তার নিয়োজিত লোকজন অবৈধভাবে নগরঘাটের রেলিগেট পাড়ে ফেরী ও নৌকায় পারাপার কৃত মালামালের গাড়ি থেকে জোর করে পুনরায় টোল উত্তোলন করছে ফেরীর ইজারাদার ফিরোজ মোল্লার নির্দেশে।
উল্লেখ্য ফেরীর ইজারাদার কতৃক রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টোল উত্তোলন এবং রেলিগেট পাড়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ পেয়ে গত ২০ এপ্রিল দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ ফেরিঘাটে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি অতিরিক্ত টোল আদায় সহ টোল আদায়ের রশিদ না প্রদান করার সত্যতা পান। তিনি মৌখিক ভাবে ইজারাদারকে সর্তক করেন এবং ফেরী সহ উভয় পাড়ে বড় করে টোলের তালিকা টানিয়ে রাখার নির্দেশনা দেন।
এছাড়াও গত ২৬ এপ্রিল ও ২২ শে জুন উপজেলার মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নগরঘাট ফেরীতে অতিরিক্ত টোল আদায় ও রেলিগেট পাড়ে চাঁদাবাজির বিষয় উত্থাপিত হলে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মূর্শেদী নগরঘাট ফেরীতে রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টোল আদায় ও রেলিগেট পাড়ে চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরীতে পারাপারকৃত মালামালের গাড়ি ও যানবাহন থেকে টোল উত্তোলন বন্ধ ও ইজারা বাতিলসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।