বদলি হয়ে চলে গেলেন তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান মিয়া। সম্প্রতি ওঁর বদলির আদেশ হয়েছে। উনাকে তানোর থানা থেকে রাজশাহী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় তিনি তানোর থানার নতুন ওসিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে চলে গেলেন রাজশাহীতে। বিদায় কালে কথা হলো ওঁর সাথে, হলো কুশল বিনিময়। দোয়া রইল ভালো থাকেন। ওঁর সাথে আমার কিন্তু প্রায়ই মতের অমিল ঘটতো।
সোমবার ওঁর চলে যাওয়ার আগ মুহুর্তে বিকাল ৪ টায় আমাকে ফোন করেছিলেন উনি, আমি ইচ্ছে করেই ফোনটা ধরলাম না। শুয়ে শুয়ে অনেকক্ষন ওঁর কার্যক্রম নিয়ে একটু মনোযোগী হলাম, আমার মন বল্লো উনি ধর্যের সহিত তানোরের সেবা প্রত্যাশী মানুষকে সেবা দিয়ে গেছেন, হয়রানি করেননি তানোরের মানুষকে এবং মানব কল্যানেই দায়িত্ব পালন করেছেন।
পরে সাড়ে ৫ টার দিকে ফোন দিলাম উনি ডাকলেন বল্লেন সাজু চলে যাচ্ছি আসেন একটু দেখা করি, ওঁর এই কথাটা অমান্য করার সুযোগ পেলাম না, ছুটে গেলাম ওঁর সাথে দেখা করতে কথা হলো, হলো কুশল বিনিময। আপনি ভালো খাকবেন ফিআমানিল্লাহ।
সবার কাছে সবাই ভালো হতে পারে না, দোষে গুনেই মানুষ। উনিও ভুলের উর্ধে ছিলেন না। তবে, সব মিলিয়ে উনি মানব কল্যাণেতানোরে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন ধর্য আর বিনয়ের সাথে এটা মানতেই হবে। সব মিলিয়ে উনি ভালোই ছিলেন।
মনে পড়ে উনি তানোরে যোগদানের পর পরই প্রতিটি এলাকায় গিয়ে বলেছিলেন থানার কাজে কাউকে কোন টাকা দিতে হবে না।
উনি ওঁর সেই কথা রাখতে সক্ষম হয়েছেন। ওঁর এই কাজ ইতিহাস হয়ে থাকবে তানোর বাসীর হৃদয়ে ইনশাআল্লাহ।
যেমন উনি তানোরে যোগদানের পর ঘোষনা দিয়ে তানোর থানা দালাল মুক্ত করেছিলেন। কোন অভিযোগ হুট করেই মামলা হিসেবে রেকর্ড করতেন না। তদন্ত করেই মামলা হওয়ার হলে মামলা করতেন না হলে, বিষয়টি উভয়ের মধ্যে আপস মিমাংসা করে দিতেন।
তানোর থানায় অভিযোগ করতে আসা কোন ব্যক্তিকে টেবিলে টেবিলে টাকা দিতে হতো না। এমনকি অভিযোগ লিখতেও কম্পিউটার অপারেটরকে কোন টাকা দিতে হতোনা। এর আগের ইতিহাস সবারই জানা আছে হয়তোবা।
থানার বাইরে কম্পিউটারের দোকানে ১ শ' টাকা থেকে ২ শ' টাকা দিয়ে লিখে আনা কোন অভিযোগ গ্রহন করতেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলতেন কম্পিউটার দোকানীরা তো এমনি এমনি অভিযোগ লিখে দেননা। তারা টাকা নিয়ে অভিযোগ লিখে দেন। অভিযোগ দিতে হলে এখানেই লিখেন কোন টাকা লাগবে না। তিনি নিয়মিত ভাবেই ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন।
সকল দিবসে তিনি স্টাফদের খাওয়াতেন পরিবারসহ। মাদক নির্মুলে উনি কঠোর ছিলেন, শুনতেন না কারো কোন তৎবির। তিনি বেশ কয়েকটি বড় বড় মাদকের চালান জ¦ব্দ করেছেন। পাশাপাশি প্রতিদিনই মাদক সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার করতে সর্বদা তৎপর ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত পুরোনো দীর্ঘদিনের পলাতক আসামীদের তিনি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি ভোর ৪-৫ টা পর্যন্ত অফিসে বসে থেকে টহলরত পুলিশ টিমের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করতেন। যা অন্যান্যের দেখিনি। সাদা মাটা ভাবে জীবন যাপন করা মানুষটি কথা মনে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
উনার এমন কর্মকা- তানোরের মানুষের হৃদয়ে থাকবে। ভালো থাকুন ভালো রাখুন মানব কল্যাণেসুন্দর আগামীর পথে এগিয়ে যান, দোয়া ও শুভ কামনা রইল।।