পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে আগের চেয়ে প্রায় চারগুন বেশি যানবাহন চলাচল করছে। কিন্তু পূর্বের সরু এ জাতীয় মহাসড়কের কারণে ফরিদপুরের ভাঙা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত যানজট ও দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত করতে যাচ্ছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২৫৯ কিলোমিটারের এ মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করতে ৩০২ দশমিক ৭০ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় হচ্ছে ১৮শ’ ৬৭ কোটি টাকা। সকল সম্ভাবতা যাচাই শেষে নানা জটিলতা কাটিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বরিশাল জেলার ভূমি মালিকদের হাতে জমি অধিগ্রহণের চেক তুলে দেওয়া শুরু হয়েছে। দালালের খপ্পরে পরে ক্ষতিগ্রস্থ ভূমি মালিকরা যেন কোনধরনের ভোগান্তির শিকার না হন, সেজন্য ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি ফরিদপুর থেকে দেশের সর্বদক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটা পর্যন্ত ঢাকা-বরিশাল জাতীয় মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বরিশাল জেলার স্ব স্ব এলাকায় গিয়ে জেলা প্রশাসক নিজে ক্ষতিগ্রস্থ ভূমি মালিকদের হাতে তাদের চেক তুলে দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে জেলায় জমি অধিগ্রহণের প্রায় ২৫ কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে। সবশেষ গত ১০ জুলাই বিকেলে গৌরনদী উপজেলার ভূক্তভোগী ১৭টি পরিবারের গৃহকর্তাদের হাতে তিন কোটি তিন লাখ ১৪ হাজার ৫৭১ টাকার চেক তুলে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এতোদিন ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় থমকে ছিলো ঢাকা-ভাঙা-মাদারীপুর-বরিশাল মহাসড়কের চারলেনে উন্নীতকরণের কাজ। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত হলে কমবে দুর্ঘটনা, বাড়বে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-বরিশাল জাতীয় মহাসড়কের প্রথম ধাপে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙা পর্যন্ত ৬১ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হয়েছে। চারলেনের সাথে এ সড়কে যোগ হয়েছে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য দুইপাশে দুটি সার্ভিস লেন। কিন্তু ফরিদপুরের ভাঙার মোড় থেকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর-মাদারীপুরের রাজৈর, সদর উপজেলা, কালকিনি ও বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কের পুরোটাই সরু। এ ছাড়া সড়ক বিভাজক না থাকায় যানজটের পাশাপাশি অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে যানবাহনের গতি ধীর হওয়ার পাশাপাশি নষ্ট হয় সময়। এ সমস্যার সমাধান এবং পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ সুফল দক্ষিণাঞ্চলবাসীর মাঝে ছড়িয়ে দিতে ভাঙা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত আধুনিক সড়ক নির্মাণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। সে অনুযায়ী, ২০১৬ সালের শেষেরদিকে শুরু হয় সড়ক নির্মাণের সমীক্ষা। প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর একনেকে অনুমোদন পায়। এ প্রকল্পে শুধু জমি অধিগ্রহণের জন্য ১ হাজার ৮৬৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা অনুমোদন দিয়েছিল একনেক। ২০২০ সালে ৩০ জুনের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ শেষ করার নির্দেশনা ছিলো। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে নির্ধারিত মেয়াদে জমি অধিগ্রহণ শুরু করা যায়নি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভূমি অধিগ্রহণ শেষে সড়ক বিভাগকে জমি বুঝিয়ে দিলেই তারা টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারবে। তবে এতোদিনে মহাসড়কের মাদারীপুর অংশের ভূমি অধিগ্রহণ করা হলেও, বরিশাল অংশের ভূমি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অধিগ্রহণ শেষ করতে না পাড়ায় থমকে ছিলো গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পের কাজ।
সূত্রমতে, গত সাত মাস পূর্বে বরিশালের জেলা প্রশাসক হিসেবে মো. জাহাঙ্গীর হোসেন যোগদানের পর জমি অধিগ্রহণের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্বদিয়ে কাজ শুরু করেন। কয়েক দফায় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে ভূক্তভোগীদের সাথে আলোচনা সভা করেন। ফলশ্রুতিতে স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি (জেলা প্রশাসক) মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করণে দীর্ঘদিন জটিলতার বেড়াজালে আটকে থাকা কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি (জেলা প্রশাসক) ভূমি মালিকদের যাতে বরিশাল শহরে এসে দালালের খপ্পরে পরে ভোগান্তির শিকার হতে না হয়, সেজন্য ক্ষতিগ্রস্থদের চেক নিয়ে স্ব স্ব এলাকায় গিয়ে নিজহাতে চেক বিতরণ করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
ভূক্তভোগী ভূমি মালিক ফরহাদ মুন্সী, আল-মাদানী সিকদার, জসিম হাসানসহ একাধিক ব্যক্তিরা বলেন, জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেনের আন্তরিকতায় তারা মুগ্ধ হয়েছেন। তিনি একাধিকবার তাদের সাথে আলোচনা করেছেন। পরবর্তীতে কোন ঝামেলা ছাড়াই চেক নিয়ে জেলা প্রশাসক এলাকায় এসে নিজে আমাদের হাতে চেক তুলে দিয়েছেন। অথচ এই চেকগুলো বরিশালে শহরে আনতে গেলে তাদের চরম ভোগান্তিসহ দূর্ঘটনারও আশঙ্কা ছিলো। তারা আরও বলেন, বর্তমান সরকারের প্রকৃত উন্নয়নের মূললক্ষ্য তারা বর্তমান জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দেখতে পেয়েছেন।
কুয়াকাটা থেকে ঢাকাগামী ট্রাকচালক পলাশ বেপারী বলেন, কুয়াকাটা থেকে ভাঙা পর্যন্ত চারলেন সড়ক হলে আমরা কম সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো। তিনি আরও বলেন, কত সরকার এল আর গেলো। কিন্তু একসময়ের অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলবাসীর ভাগ্যোন্নয়নে কেউ এগিয়ে আসেনি। শুধু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতোবার ক্ষমতায় এসেছেন ততোবারই দক্ষিণাঞ্চলে উন্নয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই চারলেন সড়ক নির্মানের সাহসী উদ্যোগ গ্রহণ না করলে আর কেউ এই কাজ করতে সাহস পেতেন না।
সচেতন নাগরিক কমিটির বরিশাল জেলার সাবেক সভাপতি প্রফেসর শাহ্ সাজেদা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকেই শুনে আসছি ঢাকা-ভাঙা-বরিশাল মহাসড়ক চারলেন হবে। এতোদিনে তার কোনো অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়নি। অবশেষে সবধরনের জটিলতা কাটিয়ে বর্তমান জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেনের আন্তরিকতায় ভূমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় শেষপর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি বর্তমান জেলা প্রশাসক ভূমি অধিগ্রহণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে পারবেন। এজন্য তাকে পর্যাপ্ত সময় ও সহযোগিতা করতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, মহাসড়কটি দ্রুত চারলেনে উন্নীত হলে একদিকে যেমন কোন যানজট থাকবেনা, তেমনি সড়ক দুর্ঘটনা একদম কমে আসবে।
বরিশাল বাস মালিক গ্রুপের দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, সত্তরের দশকের ১২ ফুট চওড়া বরিশাল-ভাঙ্গা সড়ক এখন বেড়ে মাত্র ২৪ ফুট হয়েছে। অথচ এই দীর্ঘসময়ে দেশের জনসংখ্যা আড়াইগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। সবশেষ পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে পূর্বের চেয়ে যানবাহনের সংখ্যা প্রায় চারগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি মহাসড়ক ঘেঁষে অধিকাংশ এলাকায় হাট ও বাজার বসায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
বরিশালের কৃতী সন্তান ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন শিল্পকারখানা গড়ে উঠতে শুরু করেছে। এতে রাজধানীমুখী যান চলাচলও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সাথে সড়ক সংযোগ উন্নয়ন আগামীতে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এজন্য ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর সাথে সংযোগ হিসেবে ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে ভাঙা পর্যন্ত চারলেন সড়ক করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ফরিদপুরের ভাঙা থেকে মাদারীপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। তিনি আরও বলেন, চারলেনের কাজ সম্পন্ন হলে শিল্পোন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দক্ষিণাঞ্চলবাসী আরো কয়েকধাপ এগিয়ে যাবে। এজন্য আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে পূর্ণরায় ক্ষমতায় আনতে তিনি (বলরাম) দক্ষিণাঞ্চলবাসীর কাছে জোর অনুরোধ করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠণ করতে না পারলে এসব উন্নয়নকাজ মুখ থুবরে পরবে।
বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি ও বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসন থেকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভ্রাব্য প্রার্থী ক্যাপ্টেন (অব.) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, নিজেদের টাকায় নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড়স্থাপনা পদ্মা সেতু চালুর মধ্যদিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার তিন কোটি মানুষকে যুক্ত করেছে ঢাকাসহ দেশের অন্যসব অঞ্চলের সাথে। পদ্মা সেতুর সাথে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মান করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে ২০১৫ সালে ভাঙা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা মহাসড়ককে চারলেনে উন্নীত করতে সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলো। কিন্তু জমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতার কারণে তা এতোদিনেও বাস্তবায়ন করা যায়নি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় পায়রা বন্দর, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ও দক্ষিণাঞ্চলের বাণিজ্যকে মাথায় রেখে এবার চারলেনের মহাসড়কের জন্য ইতোমধ্যে বেশিরভাগ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশ রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বরিশাল সওজের দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে মহাসড়কের পাশে থাকা সওজের সম্পত্তিতে গড়ে ওঠা অবৈধস্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশ জারির পাশাপাশি অবৈধস্থাপনাগুলো লাল রঙ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। একইসাথে মহাসড়কের পাশের সু-বিশাল গাছ বিক্রির জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সূত্রমতে, সড়ক নির্মাণে কতটুকু জমি অধিগ্রহণ করতে হবে, তা চিহ্নিত করার দায়িত্ব পাওয়া পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ভুলের কারণে এ দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিয়েছিলো। অবশেষে সকল জটিলতা কাটিয়ে জমি অধিগ্রহণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সম্ভ্রাব্য জনপ্রিয় প্রার্থী প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের সাবেক পরিচালক আতিকুর রহমান আতিক বলেন, পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। আর এজন্য বরিশালের মানুষ আজীবন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। তিনি আরও বলেন, কাঙ্খিত পদ্মা সেতুর পুরোপুরি সুফল পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এবার ফোরলেন সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এতে করে আশা করা যাচ্ছে, জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হলেই সড়ক নির্মান কাজ শুরু করা হবে।
আতিকুর রহমান আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন, ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে সাগরকন্যা কুয়াকাটা পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপন করা হবে। আর প্রধানমন্ত্রী কাউকে স্বপ্ন দেখায় না। তিনি নিজ মুখে যে ঘোষণা করেন, তা যতো বাঁধাই আসুক না কেন বাস্তবায়ক করে দেখান। তাই বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলবাসীর ভাগ্যোন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পূর্ণরায় ক্ষমতায় আনার কোন বিকল্প নেই। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে পূর্ণরায় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে আওয়ামী লীগ সরকার গঠণ করলে ঢাকা থেকে সরাসরি ট্রেন যাবে বরিশালে। নতুবা কোন জেলায় রেল লাইন নেই, সেই বইয়ের পাতায়ই পড়ে থাকতে হবে বরিশালবাসীকে। এজন্য এখনই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে বরিশালবাসীকে।
ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজালের (ডিপিপি) তথ্যমতে, ফরিদপুরের ভাঙা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২৫৯ কিলোমিটার দুইলেনের মহাসড়ক রয়েছে। এটি চারলেনে উন্নীত করতে ৩০২ দশমিক ৭০ হেক্টর জমি প্রয়োজন হবে। আর এ জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ব্যয় হবে প্রায় ১৮শ’ ৬৭ কোটি টাকা।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটার দূরত্ব ২৯৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যেতে সময় লাগে ছয় ঘন্টা। কিন্তু বর্ধিত যানবাহনের চাঁপ ও ভাঙা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত সরু মহাসড়কে যানজট থাকায় সেই সুফল মিলছেনা। যেকারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তুরিকতায় জাতীয় এ মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর এ মহাসড়কটি চারলেনে নির্মাণের পর দক্ষিণাঞ্চলবাসী নানাভাবে উপকৃত হবেন। একইসাথে পায়রা সমুদ্র বন্দরে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে আরও গতিশীলতা আসবে। ফরিদপুরের ভাঙা থেকে মাদারীপুর হয়ে বরিশাল দিয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ককে চারলেনে উন্নীত করার উদ্যোগ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের একটি জনবান্ধব মহাউদ্যোগ। যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে এগোচ্ছে। পদ্মা সেতুর পর ভাঙা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কটি ফোরলেনে উন্নীতর মধ্যদিয়ে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য এটিই হবে আরও একটি মাইলফলক কাজ।