বরিশালের মুলাদীতে প্রবাসে যাওয়ার ভিসা চাওয়ায় সাব্বির হোসেন খান (২৩) নামের এক যুবককে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার চরকালেখান ইউনিয়নের চরকালেখান গ্রামের মাঝেরচর শাহাবুদ্দিন সরদারের বাড়ির কাছে সাব্বির খানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। সাব্বির খান চরকালেখান ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের মোস্তফা খানের ছেলে।
বিদেশে যাওয়ার ভিসার জন্য চাপ দেওয়ায় সাব্বিরকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানান মোস্তফা খান। তবে সাব্বির খান আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী মীম আক্তার। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাব্বিরের শাশুড়ি নাদিয়া আক্তার মঞ্জু ও স্ত্রী মীম আক্তারকে আটক করেছে। নাদিয়া আক্তার মঞ্জু বরিশাল সদর উপজেলার হরিনাফুলিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মন্টু হাওলাদারের স্ত্রী।
মোস্তফা খান জানান, প্রায় ৭ মাস আগে তার ছেলে সাব্বিরকে সৌদিআরব নেওয়ার জন্য নাদিয়া আক্তার মঞ্জু ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নেয়। একমাসের মধ্যে ভিসা দেওয়ার কথা ছিলো। ভিসার খোঁজ নিতে গিয়ে সাব্বিরের সঙ্গে নাদিয়া আক্তার মঞ্জুর ডির্ভোসী মেয়ে মীম আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হয়। বিদেশ যাওয়ার বাকী খরচ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষের দিকে মঞ্জু গোপনে তার মেয়ের সঙ্গে সাব্বিরের বিয়ে দেন। বিয়ের পর সাব্বির স্ত্রীকে নিয়ে চরকালেখান মাদ্রাসার বাজার এলাকার জনৈক বাকী উল্লাহর বাসায় ভাড়া থাকতো। শুক্রবার দুপুরে ভাড়া বাসা থেকে প্রায় দেরকিলোমিটার দূরে সাব্বিরের ঝুলন্ত লাশ দেখে স্থানীয়রা পুলিশ ও স্বজনদের সংবাদ দেয়।
মোস্তফা খান আরও জানান, সাব্বির বিদেশ যাওয়ার ভিসার জন্য শাশুড়ি ও স্ত্রীকে কয়েক বার তাগিদ দিয়েছে। এনিয়ে ইতোপূর্বে তাদের মধ্যে কয়েক বার ঝগড়া হয়েছিলো। শুক্রবার ওই ঘটনার জেরধরে সাব্বিরের শাশুড়ি ও স্ত্রী লোকজন নিয়ে তাকে হত্যা করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে।
এব্যাপারে মীম আক্তার জানান, ‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে শুক্রবার সাব্বিরের সঙ্গে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার মধ্যে সাব্বির আমাকে মারধর করে আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়ে বাসা থেকে বের হয়। আমি তার পিছু নিয়ে চরকালেখান মাঝেরচর এলাকায় শাহাবুদ্দিন সরদারের বাড়ির কাছে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে ডাকচিৎকার দিলে লোকজন এসে পুলিশে সংবাদ দেয়।’
এব্যাপারে মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুবুর রহমান জানান, ‘সাব্বিরের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে থানায় আনা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’