নড়াইলে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এক্ষেত্রে শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। এর মধ্যে রয়েছে শিশুরাও। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত গত ছয় মাসে ৩৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এদিকে, জুলাইয়ের প্রথম থেকে রোববার পর্যন্ত ১৬দিনেই শনাক্ত হয়েছে ৫২জন। এদিকে, আজ (রোববার) একদিনেই ভর্তি হয়েছেন নয়জন।
অন্যদিকে, নড়াইলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও সদর হাসপাতালে নেই আলাদা ডেঙ্গু কর্ণার। ফলে অন্য সব রোগিরা ডেঙ্গু আক্রান্তদের সঙ্গেই থাকছেন এখানে। অন্যদিকে, নড়াইল সদর হাসপাতালের চারপাশ যেন মশা উৎপাদনের উর্বর ভূমি। বিশেষ করে ডেঙ্গু রোগিরা যেখানে ভর্তি আছেন, তার পেছনের ড্রেনে জলাবদ্ধতা যেমন রয়েছে; তেমনি ঘন ঝোপণ্ডজঙ্গলে ভরপুর। হাসপাতালেই মশা উৎপাদনের এ করুণদশা দেখার কেউ নেই যেন। এমনটি বলছেন রোগিসহ স্বজনরা। এক্ষেত্রে নিজেদের জনবল সংকটসহ পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দুষছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, নড়াইল সদর হাসপাতালে ১০০ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০জন রোগি ভর্তি থাকছেন। তার উপর ডেঙ্গু রোগির চাপ তো রয়েছেই। এক্ষেত্রে জায়গার অভাবে আলাদা ডেঙ্গু কর্ণার না থাকায় সমস্যা বেশি দেখা দিয়েছে। সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আবদুল গফফার বলেন, হাসপাতালটি এমনিতেই নিচু জমির ওপর অবস্থিত। তারপর ড্রেনেজ ব্যবস্থাও ভালো নয়। পানি বের হওয়ায় ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এ ব্যাপারে নড়াইল পৌর কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলার পরও পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তাই ড্রেনে পানি জমে মশার বংশবিস্তারের মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসক, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ বিভিন্ন পদে জনবল সংকট রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরও সংকট দূর হচ্ছে না। এখানে ৩৯ চিকিৎসকের পরিবর্তে কর্মরত আছেন ১৬ জন। আর সরকারি ভাবে নিয়োগকৃত পরিচ্ছন্নতাকর্মী নেই একজনও। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ২৮জন কাজ করছেন এখানে।
সিভিল সার্জন ডাক্তার সাজেদা বেগম পলিন বলেন, নড়াইলের স্থানীয় লোকজনই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এক্ষেত্রে ঢাকা কিংবা বাইরে থেকে লোকজন আসার ফলে এ জেলায় ডেঙ্গু বেড়েছে এমনটি নয়। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে গণসচেতনতার পাশাপাশি পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সর্বত্র জোর দেয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত নড়াইলে ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।