কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বন্যার পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এখনো জাগেনি ঘর-বাড়ি ও রাস্তাঘাট। দুর্ভোগে রয়েছে পানিবন্দী ৩ হাজার পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। উজানের ঢেউ ও বৃষ্টিতে সৃষ্ট চলমান বন্যায় দুধকুমারের বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয় উপজেলার বামনডাঙ্গা, রায়গঞ্জ, বেরুবাড়ি, কালীগঞ্জ, নুনখাওয়া, নারায়ণপুর, কেদার, কচাকাটা, বল্লভেরখাস ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা ও পৌরসভার পুর্ব সাঞ্জুয়ারভিটাসহ বেশকিছু এলাকা। পানিবন্দী হয়ে পড়ে ৩ হাজার পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। পানি কমে বন্যার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো ডুবে আছে বেশিরভাগ রাস্তা-ঘাট। জলমগ্ন রয়েছে ঘর-বাড়ি। এখনও পানিতে তলিয়ে আছে উপজেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাঠে পানি জমে থাকায় বন্ধ রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া। তাই পানিবন্দী বন্যার্ত ঐ মানুষগুলোর দুর্ভোগ কমেনি এখনও। সময়ের সাথে সাথে তাদের ফুরিয়ে আসছে শুকনো খাবারের মজুদ। অভাব রয়েছে বিশুদ্ধ পানির। অনেকের রান্নাঘরেও পানি জমে থাকায় চূলায় আগুন জ্বালাতে না পেরে অনাহারে অর্ধাহারে থাকতে হচ্ছে বানভাসীদেরকে। ফান্দেরচরের আছমা বেগম জানায় কয়েকদিন ধরে ঘরবাড়িতে পানি থাকায় খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করছেন তারা। তবে এখন কিছুটা টপানি কমলেও রান্নাঘরসহ পুরো বাড়িতে কাদা লেগে আছে। ভেজা সেঁতসেঁতে আঙ্গিনায় চলাফেরায় দুর্ভোগ বেড়েছে তাদের। নুনখাওয়া ইউনিয়নের ব্যাপারীরচর এলাকার ফজিলা বেগম, নুরজাহান জানান বাড়িতে পানি থাকায় টিউবঅয়েল থেকে ঘোলা পানি বের হচ্ছে। ফলে এই পানি খাওয়া যায় না। দূরদূরান্ত থেকে পানি এনে খেতে হচ্ছে তাদের। এই পানি ভালো হতে আরও বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে বলেও জানান তারা। তবে ডায়েরিয়া, জ্বর, স্বর্দিসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের আসঙ্কা করছেন বন্যা দুর্গতরা। এদিকে বানভাসীদের অভিযোগ অনেকেই শুকনো খাবারের অভাবে দিন কাটালেও তাদের খোঁজ নেয়নি কেউ। পায়নি ত্রাণ সহায়তা। তবে উপজেলা প্রশাসনের দাবি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে তাদের। সেগুলো পর্যায়ক্রমে বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে বানভাসীদের জন্য ৫৯ মেট্টিকটন জি.আর চাউল ও আড়াই লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা প্রতিদিন বন্যাকবলিত এলাকায় বন্যা দুর্গতদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।