আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে পৃথিবীর কোনো শক্তি বর্তমান সরকারের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।
তিনি বলেছেন, বিএনপি ভোটের মধ্যদিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলেই পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। সেই কারণে তারা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে, চক্রান্ত করছে। আওয়ামী লীগ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ আছে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই ষড়যন্ত্র করে চক্রান্ত করে আমাদের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারে।
বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ১২টায় রংপুর মহানগরীর বেতপট্টি দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশ শেষে উন্নয়ন শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এসে প্রেসক্লাব চত্বরে শেষ হয়।
শান্তি সমাবেশে রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার আলোকিত বাংলাদেশকে অন্ধকারে নিয়ে যাওয়ার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। তারই অংশ হিসেবে আজকে বিএনপি এবং তাদের শরীকরা প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে উন্নয়ন অগ্রগতির ধারাকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমরা (আওয়ামী লীগ) প্রতিহিংসা বিশ্বাস করি না। আমরা প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী, শান্তিতে বিশ্বাসী। আমরা সহিংসতায় বিশ্বাস করি না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি যখনই কোনো কর্মসূচি দেয়, তখন জনমনে আতঙ্ক দেখা দেয়। জনগণ অশান্তিতে থাকে। জনগণের স্বস্তি ও শান্তির লক্ষ্যে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তার লক্ষ্যে আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। আমরা চাই প্রত্যেকটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। সেই নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও একই পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে।
বিএনপি কর্মসূচির নামে সহিংসতা, নৈরাজ্য করছে দাবি করে সুজিত রায় নন্দী বলেন, বিএনপি কর্মসূচির নামে সহিংসতা করছে। তারা যখন ক্ষমতায় ছিল নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে আওয়ামী লীগের হাজার নেতাকর্মীকে বিএনপি হত্যা করেছে। ফাহিমা, মহিমা, পূর্ণিমাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় তারা ধর্ষণ করেছে। বিএনপি অবরোধের নামে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। পৃথিবীর মানবতার ইতিহাসকে তারা লঙ্ঘন করেছে। বিএনপিকে কোনো দিনই ক্ষমা করা যাবে না। বিএনপি আবার দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়। এ সময় তিনি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকা-, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এ কে এম ছায়াদত হোসেন বকুল, যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুল, মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম প্রমুখ।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ থেকে আগামী ৫ই আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রংপুরে আগমন ঘিরে নেতাকর্মীদের প্রতি নানা দিক নির্দেশনা তুলে ধরেন দলের নেতারা। তারা বলেন, আগামী ৫ আগস্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরে দলের বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়ে ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে ঘিরে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ এখন অনেক উজ্জীবিত।
শান্তি সমাবেশের আলোচনা শেষে জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে শহরে উন্নয়ন শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। এতে জেলা আওয়ামী লীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং জেলার প্রত্যেকটি উপজেলা থেকে আসা নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।