আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাবেই নায়ক হয়ে উঠেছিলেন কাইল জেমিসন। সেই তিনিই আড়ালে পড়ে রয়েছেন একের পর এক চোটের হানায়। থমকে যাওয়া ক্যারিয়ারে নতুন গতি দেওয়ার সুযোগ অবশেষে এলো তার সামনে। সব ঠিকঠাক থাকলে ১৪ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলবেন নিউ জিল্যান্ডের এই পেসার। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের নিউ জিল্যান্ড দলে জায়গা পেয়েছেন জেমিসন। পিঠের অস্ত্রোপচারের পর এই দুই সফর দিয়েই মাঠে ফিরছেন ২৮ বছর বয়সী পেসার। প্রথমবারের মতো দলে ডাক পেয়েছেন অলরাউন্ডার ডিন ফক্সক্রফট ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেগ স্পিনার আদিত্য অশোক। তারা দুজন অবশ্য থাকছেন শুধু সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের দলে। এই সিরিজে অনেকটাই দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে খেলবে নিউ জিল্যান্ড। এখানে থাকছেন না ফিন অ্যালেন, ডেভন কনওয়ে, ম্যাট হেনরি, অ্যাডাম মিল্ন, ড্যারিল মিচেল, গ্লেন ফিলিপস ও ইশ সোধি। তবে ইংল্যান্ড সফরের দলে আছেন তারা সবাই। জেমিসন সবশেষ নিউ জিল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন গত বছরের জুনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সবশেষ খেলেছেন সেই ২০২১ সালের মার্চে। ওই ইংল্যান্ড সফরে চোট পেয়ে ৬ মাসের বেশি সময় মাঠের বাইরে থাকেন তিনি। পরে গত জানুয়ারিতে ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে ফেরেন ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার পেসার। তবে সীমিত ওভারের ঘরোয়া আসরে ৫টি ম্যাচ খেলে ফেব্রুয়ারিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পর আবার ছিটক পড়েন বাইরে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট দলে তাকে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত খেলতে পারেননি। বরং অস্ত্রোপচার করাতে হয় পিঠে। অবশেষে লম্বা পুনবার্সন প্রক্রিয়া শেষে তিনি ফিরতে পারলেন। চোটের কারণে কেন উইলিয়ামসন ও অলরাউন্ডার মাইকেল ব্রেসওয়েল থাকছেন বাইরেই। মূলত ব্রেসওয়েলের সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবেই নেওয়া হয়েছে ডিন ফক্সক্রফটকে। ব্রেসওয়েলের মতো তিনিও আগ্রাসী ব্যাটসম্যান ও অলরাউন্ডার। ২৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার সবশেষ মৌসুমে নিউ জিল্যান্ডের বর্ষসেরা ঘরোয়া ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পান। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট সুপার স্ম্যাশে ৪৭.১১ গড়ে ৪২৪ রান করেন তিনি ১৩১.২৬ স্ট্রাইক রেটে, পাশাপাশি উইকেট নেন ৯টি। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট প্লাঙ্কেট শিল্ডে এই মৌসুমে ৪৫.০৭ গড়ে করেন ৬৩১ রান, উইকেট নেন ৭টি। লেগ স্পিনার অশোকের জন্ম ভারতের তামিলনাড়ুর ভেলোরে। বাবা-মায়ের সঙ্গে চার বছর বয়সে তিনি পাড়ি জমান অকল্যান্ডে। এরপর নিউ জিল্যান্ডের বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে অংশ নেন ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। সেখান থেকে ঘরোয়া ক্রিকেটেও সম্ভাবনার ছাপ রেখে ২০ বছর বয়সী ক্রিকেটার এবার জায়গা করে নিলেন জাতীয় দলে। ফক্সক্রফট ও অশোকের সঙ্গে আরও ৫ ক্রিকেটার- চ্যাড বাওয়েস, ডেন ক্লিভার, কোল ম্যাকনকি, হেনরি শিপলি ও উইল ইয়াং আছেন শুধু সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের দলে। তবে মূল স্কোয়াডের অংশ না হলেও তারা সবাই যাবেন ইংল্যান্ড সফরেও। সেখানে প্রস্তুতি ম্যাচে খেলার বিবেচনায় রাখা হবে তাদের। দুই সফরের দলেই থাকা দুই অলরাউন্ডার জিমি নিশাম ও মিচেল স্যান্টনার এই দুই সিরিজের মাঝখানে খেলবেন ইংল্যান্ডের দা হান্ড্রেড-এ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুবাইয়ে নিউ জিল্যান্ডের ৩টি টি-টোয়েন্টি ১৭, ১৯ ও ২০ অগাস্ট। এরপর ইংল্যান্ডে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের পর ৪ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু ৩০ অগাস্ট।
নিউ জিল্যান্ড দল:
দুই সফরের দলে: টিম সাউদি (অধিনায়ক), মার্ক চাপম্যান, লকি ফার্গুসন, কাইল জেমিসন, জিমি নিশাম, রাচিন রবীন্দ্র, মিচেল স্যান্টনার, টিম সাইফার্ট।
শুধু সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের দলে: আদিত্য অশোক, চ্যাড বাওয়েস, ডেন ক্লিভার, ডিন ফক্সক্রফট, কোল ম্যাকনকি, হেনরি শিপলি, উইল ইয়াং।
শুধু ইংল্যান্ড সফরের দলে: ফিন অ্যালেন, ডেভন কনওেয়, ম্যাট হেনরি, অ্যাডাম মিল্ন, ড্যারিল মিচেল, গ্লেন ফিলিপস, ইশ সোধি।