ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় এক গৃহবধুকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ৯ বছর পর প্রতিবেশী মোজাম্মেল বিশ্বাস (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচাররক মোঃ মাসুদুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেণ। রায়ে মোজাম্মেলের ছোট ভাই আ: হক বিশ্বাসকে খালাশ প্রদান করা হয়। ঝালকাঠি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আ.স.ম মোস্তাফিজুর রহমান মনু রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষনার সময় আসামি মোজাম্মেল বিশ্বাস আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে মামলার নথি পর্যবেক্ষনে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর বিকালে কাঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া গ্রামে সাজাপ্রাপ্ত মোজাম্মেল বিশ্বাস, তাঁর ছেলে সজিব বিশ্বাস, ভাই আবদুল হকসহ ৬ জন মিলে প্রতিবেশী আবদুল মান্নান হাওলাদারের ঘরে ঢুকে তাঁর স্ত্রী রেহেনা বেগম (৩২) কে ঘরে একা পেয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পরের দিন ২৭ নভেম্বর আবদুল মান্নান বাদী হয়ে কাঠালিয়া থানায় মোজাম্মেল বিশ্বাস, তাঁর ছোট ভাই আঃ হক বিশ্বাস নুরুল হক বিশ্বাস, ছেলে সজিব বিশ্বাস, স্ত্রী মাসুমা বেগম ও নান্না সিকদার মোট ৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৬ জুন ঝালকাঠি সিআইডি পরিদর্শক শেখ আবুল খায়ের ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করে। আসামি সজিব বিশ্বাসের বয়স ১৬ বছর হওয়ায় তাঁর নামে আলাদা দোষীপত্র দাখিল করা হয়। মামলাটি দায়রা আদালতে বিচারে আসলে মোজাম্মেল বিশ্বাস, তাঁর ভাই আবদুল হক এবং ছেলে সজিব বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় এবং তিনজনকে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। শিশু আসামি সজিবের বিচারের জন্য দোষীপত্র শিশু আদালতে পাঠানো হয়। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে মোজাম্মেল বিশ্বাসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আঃ হক বিশ্বাসকে খালাশ প্রদান করেন। রাস্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আ.স.ম মোস্তাফিজুর রহমান মনু। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল-আমিন পলাশ। শিশু সজিবের মামলায় রায় শিশু আদালতে আগামী ৩০ জুলাই রায় ঘোষণা করা হবে।