শৈলকূপা উপজেলায় পানি সংকটের কারণে পাট জাগ দিতে পারছে না কৃষক। অনেক স্থানে ক্ষেতেই পাট রোদে পুড়ে লালচে হয়ে যাচ্ছে। অনেক কৃষক পাট কেটে অপরিষ্কার পানিতে জাগ দিচ্ছেন। এতে পাটের আঁশের রং রং কালচে হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে কৃষকরা কাক্সিক্ষত দাম না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মার্চের শেষে পাটের বীজ বপন করা হয়। পাট কাটা শুরু হয় জুনের শেষে। সাধারণত জুন মাসের শেষের দিকে খাল, বিল ও নালা বৃষ্টির পানিতে ভরে যায়। কিন্তু এবার বৃষ্টিপাত কম। খাল, বিল ও নদ-নদীতে পানি কম।
এ কারণে পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পাট জাগ দিতে প্রায় চার-পাঁচ হাত গভীর পানির প্রয়োজন হয়। পাট জাগ দিতে নসিমন বা ভ্যানে করে নিয়ে যেতে হচ্ছে কয়েক কিলোমিটার দূরে। এতে সময় ও খরচ বেশি হচ্ছে। জানা গেছে, উপজেলায় চলতি অর্থবছরে পাটের আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৪শ ২৫ হেঃ জমিতে যা গত বছরের তুলনায় ৫০ হেক্টর বেশি। যার উৎপাদন ১৯ হাজার ৩শ ৭৮ মেঃটন। সরজমিন দেখা যায়, ধলহরাচন্দ্র, শিতালী, হাটফাজিলপুর পাইকপাড়া, খুলুমবাড়িয়া নাগিরহাট, দিগনগর রতিডাঙ্গা এলাকায় খাল, বিল, ডোবা। কোন পানি নেই তবে মাঝেমধ্যে জলাশয়ের কিছুকিছু অংশে হাঁটুপানি রয়েছে। তবে যেটুকু পানি আছে তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ট নয়। গত কয়েক দিনের তীব্র রোদে পানি শুকিয়ে গেছে। পাট কেটে সড়কের ওপর স্তূপ করে রাখা হয়েছে। পাটের গোড়ার দিকে আধা হাত পরিমাণ কালচে রং ধরেছে। এ ব্যাপারে ধলহরাচন্দ্র গ্রামের পাট চাষী সুজন কুমার মন্ডল জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ১৬০শতক জমিতে পাট আবাদ করেছেন। তাতে প্রায় ৩২ মন পাট হবে। যার বর্তমান বাজার দর ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু খরচ হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার টাকা। হাটফাজিলপুরের কৃষক বকুল বিশ্বাস জানান অপেক্ষায় ছিলেন বৃষ্টির পানির জন্য। কিন্তু বাধ্য হয়ে জমির পাট কেটে ফেলেছেন। দেরিতে পাট কাটায় পাতা পুড়ে গেছে। আঁশের রং কালচে হয়ে যাবে। পানি নেই কি করব মাঠেই শুকিয়ে যাচ্ছে। তাতে পাটের ভালো দাম পাওয়া যাবে না। শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান খান বলেন, পাট জাগ দেয়া নিয়ে কৃষক বিপদে আছেন। বৃষ্টি নেই, নিচু জমিতে পানি নেই। ক্ষেতে পাট মরে যাচ্ছে। পাট নিয়ে লোকসানের মুখে রয়েছেন কৃষক। উপজেলাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ শতাংশ পাট কাটা হয়েছে। আরও ৫০ শতাংশ পাট কাটার পক্রিয়া চলছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার আনিচুজ্জামান খান জানান, পাটের আবাদ ভালো হয়েছে তবে পানির অভাবে কৃষক পাট জাগ দিতে পারছেনা মাঠেই পাট শুকিয়ে যাচ্ছে এতে পাটের ফলন কমে যায়। সরকারের নির্দেশে পাট সহজে পচানোর জন্য ‘রিবন রেটিং পদ্ধতি’ চালু করা হয়েছিল। এ পদ্ধতিকে পাট কাটার পর ছাল আলাদা করে পচিয়ে নেয়া হয়। এতে পানি কম লাগে। তবে কৃষক এ পদ্ধতি গ্রহণ করেননি।