রংপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ। মিছিল থেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নে অর্থ বরাদ্দসহ দ্রুত কাজ শুরুর দাবি জানানো হয়। সোমবার (৩১ জুলাই) দুপুরে রংপুর মহানগরীর সিটি বাজার এলাকা থেকে আনন্দ মিছিলটি বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
মিছিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ব্যানার, প্লাকার্ড ও পোস্টার প্রদর্শন করা হয়। একই সঙ্গে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি তুলে ধরে স্লোগান দেন তিস্তাপাড়ের মানুষ। মিছিলে তিস্তা নদী বেষ্টিত রংপুরের গঙ্গাচড়া, পীরগাছা, কাউনিয়া উপজেলা ছাড়াও নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা থেকে লোকজন অংশ নেন।
মিছিল শেষে টাউন হল চত্বরের উন্মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নদী ভাঙনের শিকার হওয়া তিস্তাপাড়ের মানুষসহ পরিষদের নেতাকর্মীরা। এ সময় বক্তারা বলেন, বৈষম্য দূরীকরণ, দারিদ্রতার হার কমানোসহ নদী নির্ভর উত্তরাঞ্চলকে মরুকরণ থেকে বাঁচাতে তিস্তা চুক্তির পাশাপাশি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই। এই মহাপরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আমরা তার উদ্যোগে আনন্দিত হয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর রংপুর আগমনে সেই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। আজ নদীর ভাঙনের পর ভাঙনে তিস্তাপাড়ের মানুষ আজ নিঃস্ব। তবুও প্রধানমন্ত্রীর আগমনে সবাই আশায় বুক বেঁধেছে।
রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, পদ্মা সেতু যদি দেশের টাকায় নির্মাণ করা সম্ভব হয়, তাহলে তিস্তা মহাপরিকল্পনাও বায়স্তবায়ন করা সম্ভব। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাহসী পদক্ষেপের কারণে আমাদের দেশের মানুষের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হয়েছে। ওই পদ্মা সেতুতে রংপুর বিভাগের মানুষের ট্যাক্স ও ভ্যাটের টাকা দেওয়া রয়েছে। বর্তমানে দেশে অনেকগুলো মেগাপ্রকল্প চলমান রয়েছে। কিন্তু উত্তরের মানুষের জন্য কোনো মেগাপ্রকল্প নেই। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার ঘোষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন চাই।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী, সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান, বাংলার চোখের প্রতিষ্ঠতা চেয়ারম্যান তানবীর হোসেন আশরাফী, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাজী আবদুর রাজ্জাক, রসিকের প্যানেল মেয়র মাহাবুবার রহমান মঞ্জু, তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের স্টান্ডিং কমিটির সদস্য ছাদেকুল ইসলাম, বখতিয়ার হোসেন শিশির, মশিউর রহমান, মাহমুদ আলম, আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২ আগস্ট বুধবার রংপুরে আসছেন। সেদিন রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগীয় জনসভায় বক্তব্য রাখবেন সরকারপ্রধান। তিনি দ্বাদশ নির্বাচনের প্রচারণা রংপুর থেকে শুরু করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন ঘিরে প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির হিসেব মিলাতে শুরু করেছে রংপুরের মানুষ।
শেখ হাসিনা সর্বশেষ রংপুরে এসেছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। এ সময় তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দুটি নির্বাচনী জনসভা করেছেন। সাড়ে ৪ বছরের বেশি সময় পর শেখ হাসিনা রংপুরে আসছেন। এর আগে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের জনসভায় উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।