আমার ছেলে ইমরান ভীষণ মেধাবী। সংসারে শত কষ্টের পরেও সে লেখাপড়া ছাড়েনি। বরং পরের জমিতে কামলা খেটে সংসারের পাশাপাশি তার লেখাপড়াও চালিয়ে আসছিলো। এখন সে ভাল ফলাফল করলেও তার লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুঃচিন্তায় আছি। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া ইমরান হোসেনকে নিয়ে এফএনএসকে এসব কথা বললেন ইমরানের মা রোজিনা বেগম।
ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার সোয়াদী গ্রামের ভ্যান চালক আদম আলীর ছেলে ইমরান হোসেন। সে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে কোটচাঁদপুররে সাফদারপুর মুনছুর আলী একাডেমি থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করে।
ভ্যান চালক পিতা আদম আলী বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ। যে কারণে ভ্যানগাড়িও ঠিকমত চালাতে পারিনা। নিজের ওষুধ, সংসারে পাঁচ জন সদস্য ও ছেলের স্কুলে লেখাপড়া খরচ চালাতে না পারায় অধিকাংশ সময় আমার স্কুলে পড়া ছেলে নিজেই পড়াশুনার পাশাপাশি পরের জমিতে কামলা খাটে খরচ মেটাতে।
ইমরান হোসেন তার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করতে যেয়ে সংঙ্কার কথারও জানায়, সে জানায় আমার ভীষন ইচ্ছে ডাক্তার হয়ে আমাদের মত অসহায় পরিবারের সেবা করার। কিন্তু ভাল কলেজে ভর্তি হতে হলে অর্থের প্রয়োজন। যা আমাদের নেই। এখন কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। বাবা অসুস্থ্য। বেশীর ভাগ সময় বিছানগত থাকেন। শরীর একটু ভাল লাগলে ভ্যান নিযে বেরিয়ে পড়েন সংসারের চাহিদা মেটাতে।
ওই এলাকার সমাজ সেবী মনিরুল ইসলাম মণ্টু বলেন, ভ্যান চালক আদম আলীর সহায়-সম্পদ বলতে আছে শুধু ৭শতক ভিটেমাটি। তার দ্বারা নির্বিঘেœ মেধাবী ছেলের লেখা পড়া করানোর অবস্থা নাই। যদি সমাজের বিত্তবান বা কোন প্রতিষ্ঠান ছেলেটির লেখাপড়ার সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে তা হলে এই ছেলেটি একদিন তার আপন লক্ষে পৌঁছে সমাজে ভাল ভুমিকা রাখতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
সাফদারপুর মুনছুর আলী একাডেমীর শিক্ষক চৌধুরী আফছার উদ্দীন বলেন, ইমরান হোসেন ভীষন মেধাবী ছাত্র। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও লেখাপড়ায় সে ভীষন মনোযাগী। সহযোগীতা পেলে সে অনেক দূর এগোতে পারবে।