একই জমি একাধিক ব্যক্তির কাছে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিক্রি করে প্রতারনা করে আসছে একটি প্রভাবশালী চক্র। এ ঘটনায় একাধিক মামলা দায়ের করেও রহস্যজনক কারণে ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। ফলে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ওই প্রতারক চক্রটি। ঘটনাটি নগরী সংলগ্ন বরিশাল সদর উপজেলার কর্নকাঠী এলাকার।
রোববার সকালে প্রতারণার স্বীকার ভূক্তভোগী জালিস মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, ওই এলাকার জনৈক সুরুজ মোল্লার কাছ থেকে সাব-কবলা (দলিল নং ১০৯৫৬/১৭) মূল্যে ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর আমি ১০ শতক জমি ক্রয় করে ভোগ দলখ করে আসছি। অতিসম্প্রতি ওই জমি সুরুজ মোল্লা তার দলবল নিয়ে জবর দখলের চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে (মামলা নং এমপি -৮০/২০২৩)।
একইভাবে জমি ক্রয় করে প্রতারণার স্বীকার ভূক্তভোগী কামরুন্নাহার বলেন, ২০১১ সালে সুরুজ মোল্লার কাছ থেকে ১০ শতক জমি ক্রয় করে গাইড ওয়াল করে জমিতে সীমানা দিয়ে রেখেছি। অতিসম্প্রতি ওই জমিতে ঘর তুলতে গেলে সুরুজ মোল্লা তার সহযোগিদের নিয়ে বাঁধা প্রদান করেন। ভূক্তভোগী মো. শাহজাহান মাস্টার অভিযোগ করে বলেন, বিগত ১৩ বছর পূর্বে আমি জমি ক্রয় করেছি। এখন ঘর তুলতে গেলে সুরুজ মোল্লা আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তার দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় সে (সুরুজ) ও তার সহযোগিরা বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ হুমকি অব্যাহত রেখেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোস্টগার্ডের নিজস্ব ভবনের জন্য বরিশালের কর্নকাঠিতে ২০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব রয়েছে। অধিগ্রহণের খবর শুনেই সুরুজ মোল্লা বাড়তি ক্ষতিপূরণের আশায় পরিত্যক্ত জমিতে অল্পসময়ের মধ্যে প্লান ছাড়া ২০টির মতো ভবন নির্মাণ করেন। এরআগেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ফায়ার সার্ভিসের জমি অধিগ্রহণের সময় একই পন্থা অবলম্বন করে সুরুজ মোল্লা কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
সূত্রে আরও জানা গেছে, সদর উপজেলার কর্ণকাঠী এলাকার ৪৬০৩ নং দাগের সাড়ে আট শতক জমির মালিক খলিলুর রহমানের জমি দীর্ঘ আট বছর ধরে দখল করে রাখেন এমদাদুল হক সুরুজ মোল্লা। এনিয়ে আদালতে মামলা দায়েরের পর সুরুজ মোল্লার জাল জালিয়াতি আদালতে প্রমানিত হয়। পরবর্তীতে খলিলুর রহমানের জমি উদ্ধারসহ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আদালত একটি আদেশ দেন। সে মোতাবেক প্রশাসন ও স্থানীয় এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে খলিলুর রহমানকে জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। আদালতে রায় পেয়ে জমিতে ঘর নির্মান করার মাত্র ১৩ দিনের মধ্যে সুরুজ মোল্লা তার সহযোগিদের নিয়ে খলিলুর রহমানের নির্মান করা ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়।
অভিযোগের ব্যাপারে সুরুজ মোল্লার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের কোন সত্যতা নেই। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এরপর তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তা বন্ধ করে রাখেন।