ফরিদপুরের চরভদ্রাসন সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেনী উত্তীর্ণ এক ছাত্রী ধর্ষণ, গর্ভপাত ও নগ্নছবি ভাইরালের ঘটনায় ন্যায় বিচার পাওয়ার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। সোমবার দুপুরে চরভদ্রাসন প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নির্যাতিত কলেজ ছাত্রী। সভাপতিত্ব করেন চরভদ্রাসন প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ মেজবাহ উদ্দিন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আজাদ খান ও গন্যমান্য কামাল মোল্যা প্রমূখ।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী জানায়, সে অত্যান্ত অসহায় পরিবারের মেয়ে। প্রায় সাত মাস আগে ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রতিবেশী প্রভাবশালী গৌরাঙ্গ বিশ্বাসের ছেলে হৃদয় বিশ্বাস (২০) বাড়ীর পাশে একটি নির্জন বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষনকালে হৃদয় বিশ্বাস তার নগ্ন ছবি তুলে রেখে পরবর্তিতে ব্লাক মেইল করে একাধিকবার ধর্ষন করতে থাকে। এতে কলেজছাত্রী গর্ভবর্তি হয়ে পড়লে ধর্ষকের পরিবার তাকে বৌ করে ঘরে উঠানোর প্রলোভন দিয়ে গর্ভপাত ঘটায়। এরপর ধর্ষক হৃদয় বিশ্বাস ও তার পরিবার কলেজ ছাত্রীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে ধর্ষক কলেজ ছাত্রীর নগ্নছবি গনমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল করে দেয়। ফলে কোনো উপায় না পেয়ে কলেজছাত্রী বাদী হয়ে চরভদ্রাসন থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নং-০৫, তাং-১১/৪/২০২৩ খ্রি.। অর্থবিত্ত ও প্রভাব প্রতিপত্তির জোরে প্রতিপক্ষরা মামলার চারজন আসামীর মধ্যে তিনজন জামিনে রয়েছেন। আর গত চার মাসেও প্রধান আসামি হৃদয় বিশ্বাসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেন নাই।
এদিকে ধর্ষকের আপন বোন ডাক্তার হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ম্যানেজ করে ডাক্তারী পরীক্ষার সবগুলো বিষয় নরমাল উল্লেখ করে কোর্টে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ কলেজ ছাত্রীর। এমনকি, কলেজ ছাত্রীর গর্ভপাতের বিষয়টিও ডাক্তারী পরীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ নাই। তাই সংবাদ সম্মেলনে কলেজছাত্রী পূনঃবার ডাক্তারী পরীক্ষা করানো সহ ন্যায় বিচার পাওয়ার জোর দাবী তুলেন।
সোমবার এ মামলার ব্যপারে চরভদ্রাসন থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা যুগান্তরকে বলেন,“আমরা মামলার প্রধান আসামি হৃদয় বিশ্বাসকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর বাদী পক্ষকে হুমকীর যে বিষয়টি উঠে এসেছে সে ব্যাপারে আমাদের কেউ অবগত করায় নাই”। আর চরভদ্রাসন ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আজাদ খান বলেন,“ কলেজছাত্রী ধর্ষনের ঘটনাটি আমি জানি। ওই ধর্ষক খুব খরাপ ছেলে। মামলার আগে বাদী, বিবাদী ও সাবেক ইউএনও সহ আমরা কয়েক দফায় বসেছি। ওই কলেজছাত্রী ধর্ষণ, গর্ভপাত ও নগ্ন ছবি ভাইরালের ঘটনা সত্য। কিন্তু এ ঘটনা সুরাহার জন্য ধর্ষক পরিবার আমাদের কোনো কথা রাখে নাই”।