আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ ১০ কোটি কলেরা টিকা পাবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা প্রদান সম্পর্কিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জাহিদ মালেক বলেন, একটি ভালো খবর হচ্ছে, বাংলাদেশ যেহেতু টিকা ভালো মতো দিতে পেরেছে, বাংলাদেশের মানুষ যেহেতু টিকা ভালোভাবে নিয়েছে, সেই কারণে গ্যাভি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশের ওপর খুশি। তারা আমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে তারা আমাদেরকে ১০ কোটি কলেরা ভ্যাকসিন দিবে। যা আমরা পাঁচ কোটি মানুষকে দিতে পারব। তিনি বলেন, ১০ কোটি কলেরা ভ্যাকসিন, যার মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এই টিকা দিতেও আমাদের প্রায় ৬০০ কোটি টাকা খরচ হবে। এই টিকা তারা আমাদেরকে বিনামূল্যে দিবে। এটা একটা যুগান্তকারী কাজ হবে। আমরা কোভিডের ভ্যাকসিন দিয়েছি, ইনশাল্লাহ কলেরার ভ্যাকসিনও দিতে পারব। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কিন্তু রোহিঙ্গাদেরও কলেরা টিকা দিয়েছি, ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কলেরা কিংবা ডায়রিয়া সেভাবে ছড়ায়নি। ডেঙ্গুরোগী যেহেতু কমেনি, তাই মশাও কমেনি উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরও বেশি করে মশা মারার কার্যক্রম চালানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ডেঙ্গুর কারণে স্যালাইনের চাহিদা ১০ গুণ বেড়েছে। হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গুরোগীদের প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ ব্যাগ স্যালাইন লাগে। আমাদের কাছে আনুমানিক একটি হিসেব রয়েছে, প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার ব্যাগ স্যালাইন প্রয়োজন হচ্ছে। এ পরিমাণ স্যালাইন জোগাড় করতে হাসপাতালও হিমশিম খাচ্ছে। বিভিন্ন কোম্পানিকে আমরা তাদের প্রোডাকশন বাড়াতে বলেছি। ডেঙ্গু চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটবে না। তিনি বলেন, আমাদের মশা মারার ওষুধ স্প্রে করা দরকার, আমাদের পৌরসভাগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়া দরকার। আমাদের সিটি করপোরেশনগুলো স্প্রে করছে, সেটা আরও ভালোভাবে হওয়া দরকার। কারণ মশার কামড়তো কমেনি। রোগী যেহেতু কমেনি, তাই মশার কামড়ও বেশি রয়েছে। অর্থাৎ মশা বেশি আছে। আমাদের নিজেদেরও দায়িত্ব রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ একটি মাল্টিসেক্টরাল অ্যাপ্রোচ। এটি কারো একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কাজেই আমাদের সবাইকে মিলেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে। জাহিদ মালেক বলেন, প্রতিটি জেলাতে আমরা ডেঙ্গুরোগী পাঁচ্ছি। তার মানে হলো প্রতিটি জেলাতেই এডিস মশা আছে। কাজেই এখন সারা দেশে মশা নিধন কার্যক্রমটা হওয়া উচিত। এমনকি শুধুমাত্র এ সিজনটাতেই নয়, সারাবছরই মশা নিধন কার্যক্রমটা চালানো প্রয়োজন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মো. খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া।