বিএনপির প্রতি অভিযোগ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, আমাদের উল্টো দল (বিএনপি) বিদেশিদের কাছে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে। তারা বলছে, শেখ হাসিনার এই ১০-১২ বছরে বাংলাদেশ থেকে হিন্দু সম্প্রদায় অর্ধেক হয়ে গেছে নির্যাতনের কারণে। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিন্তু আসলে হিন্দু সম্প্রদায় আরও ১০ লাখ বেড়েছে। বাংলাদেশ থেকে খ্রিস্টান নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, এরকম তথ্যও তারা দিয়েছে। বিদেশিরা আসুক, দেখুক এখানে কোনো নির্যাতন হচ্ছে কিনা? শুক্রবার দুপুরে সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের ১২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সাংবাদিকরা দেশে যুক্তরাষ্ট্রের দুজন কংগ্রেসম্যান আসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা (সাংবাদিকরা) কংগ্রেসম্যান নিয়ে এত চিন্তায় কেনো? আপনি কি আমেরিকার কংগ্রেসম্যান? আমেরিকাতে ৪৩৫ জন কংগ্রেসম্যান আছেন। তারা দুনিয়ায় বেড়াবেন তো বটেই। তারা আসলে ভালো, আসুক। আমাদের দেশ দেখে যাক। তাদের ধারণা, বাংলাদেশ হচ্ছে দরিদ্র একটা সাইক্লোনপিষ্ট গরিব দেশ। আসলে দেখবে, এরা তো গরিব না। আমরা স্বাগত জানাই। তারা এখানে আসছেন সুখবর। তারা দেখুক। তাদের ধারণা, বাংলাদেশে দিনে-রাতে রাস্তাঘাটে মানুষ মরে পড়ছে। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তারা আসছেন রোহিঙ্গাদের জন্য। ওখানে তারা কিছু খরচপাতি দেন, মানবিক কারণে। সেই খরচপাতি আমাদের দেন না। রোহিঙ্গাদের জন্যে তাদের ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সিগুলো দেয়। তারা টাকাপয়সা ঠিকমতো ব্যবহার করছে, না চুরি করছে, সেসব হয়তো দেখবেন কংগ্রেসম্যানরা। যারা আসছেন তারা টাকা অনুমোদন কমিটির সদস্য। এমনি তারা টাকা কমিয়ে দিয়েছেন। আমরা বলেছি, আরও টাকা না দিলে ঝামেলা হবে। হয়তো তারা আসলে আমাদের উপকারই হবে। টাকাটুকা বাড়াবে। আমাদের জন্য না, রোহিঙ্গাদের জন্য। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, কেউ কেউ তো বিদেশে ধুমধামে আছেন বিগত ১৫ বছর ধরে, কেমনে সম্ভব! নিশ্চয় টাকাণ্ডটুকা নিয়ে গেছেন। এগুলো আগামীতে বন্ধ করতে পারলে আমাদের দেশে ইনভেস্টমেন্ট বাড়বে। আমাদের আরও বেশি বিনিয়োগ দরকার। এইসব বড়লোকরা বিদেশে না নিয়ে গিয়ে আমাদের দেশে বিনিয়োগ করলে সবার উন্নতি হবে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের এত মাথাব্যথার কেন, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনাদের (সাংবাদিক) কারণে। জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৬৭টি দেশে নির্বাচন হয়েছে। আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও ২২টি দেশে হবে। কিন্তু সেগুলোর কোনো খবর-টবর দেখি না। বাংলাদেশে এটি কেনো হচ্ছে? কারণ, আমাদের উল্টো দল হইচই করে। বিদেশিদের কাছে সব সময় নালিশ দেয়। জনগণের কাছে তারা নালিশ পার্টি, তারা নালিশ দেয়। আর একটি হচ্ছে, আমাদের কিছু প্রবাসী আছেন, তারা ওই নালিশ পার্টির অংশ বিশেষ। তারা বাংলাদেশের ইস্যু প্রতিদিন ইনিয়ে-বিনিয়ে বলেন। মিথ্যাচার করে বলেন। এরপর ভয়াবহ দেশ বলে মনে করেন অনেকে।