দেশের বাজারে বিরাজ করছে অস্থিরতা। ডিমের দাম লাফিয়ে বাড়ছে। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে হুটহাট দাম বাড়ছে। ডিমের বাজারে সিন্ডিকেট কোনভাবে সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের হালিতে পাঁচ টাকা বেড়ে রাজধানীর খুচরা বাজারে তা ৬০ টাকায় ঠেকেছে। করপোরেট কোম্পানিগুলো ডিম বাজারে এনে দ্বিগুণ লাভ করছে। কারণ, করপোরেটদের একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকার কম। প্রান্তিক ও করপোরেটদের উৎপাদন খরচের এ ব্যবধানই বাজারে দাম নিয়ে অস্থিরতা তৈরি করে। বাজার সিন্ডিকেটের কারণে চাইলেই যখন-তখন ডিম-মুরগির দাম বাড়ানো বা কমানো হয়। পোল্ট্রি ফিডের দাম বেড়েছে। তারপরও খুচরা পর্যায়ে একটি ডিম এখন কোনোভাবেই ১৩ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। আসলে ডিমের বাজার খামারিদের নিয়ন্ত্রণে নেই। এটা নিয়ন্ত্রণ করে কিছু কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান। তারাই ঠিক করে দেয় ডিমের দাম। ডিমের দাম বাড়লে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে স্বল্প আয়ের মানুষ। কারণ ডিমের দামে মাছ বা মাংস কোনোটাই কেনা সম্ভব নয়। তাই স্বল্প আয়ের মানুষের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে বড় ভরসার জায়গা ডিম। কিন্তু এখন তা-ও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। একজন মানুষকে কমপক্ষে প্রতিদিন একটি ডিম খেতে হয়। কিন্তু ডিমের দাম যে হারে বাড়ছে তাতে নিম্ন আয়ের মানুষ কোনভাবেই একটি ডিম ১৫ টাকা দিয়ে কিনে খেতে পারবে না। এতে করে তারা গরুর গোস্ত এবং মাছের মত ডিম খাওয়াও ছেড়ে দিচ্ছে। যার ফলে তারা প্রয়োজনীয় পুষ্টি হারাচ্ছে। এতে করে আগামীর প্রজম্ম পুষ্টিহীন হয়ে যেতে পারে। দুই সপ্তাহ আগে মুরগির একটি ডিমের দাম ছিল ১০ টাকা ৫০ পয়সা। এখন তা ১৫ টাকা। দাম বাড়ার কেনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা ব্যবসায়ীদের কাছে নেই। তারপরও দাম বাড়ছে। ১৫ দিন আগের দামের সঙ্গে তুলনা করলে প্রতিদিন সারা দেশের ক্রেতাদের কাছ থেকে সব মিলিয়ে বাড়তি নেয়া হচ্ছে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ডিম-মুরগি উৎপাদনে ৮০ শতাংশ শেয়ারের প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের সুরক্ষা দিতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে দেশে আমিষের ঘাটতি চরম রূপ নিতে পারে। ডিম ও মুরগির দাম সহনীয় রাখতে ও খামারিদের উৎপাদিত পণ্যের যৌক্তিক মূল্য সংযোজন করতে হবে। পোল্ট্রি ফিডের দাম কমিয়েও উৎপাদন খরচ কমানো যেতে পারে। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্টদের বাজার সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হবে। এসব সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে না পাড়লে কোনোভাবেই ডিমের দাম কমানো সম্ভব হবে না।