১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রিজে কর্তৃপক্ষ দেলোয়ার হোসেন সাইদীর জন্য মিলাদ মাহফিল ও দোয়া করায় চেম্বার ভবনে হট্টগোল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র নিন্দার ঝড় চেম্বার সভাপতির বিরুদ্ধে।
বুধবার (১৬ই আগষ্ট) ১৫ আগষ্টে দোয়া মাহফিলে দেলোয়ার হোসেন সাইদীর জন্য দোয়া করায় চেম্বার কর্তৃপক্ষের সাথে জেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর সাথে নিন্দার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এর আগে ১৫ আগস্ট লালমনিরহাট জেলার ব্যাবসায়ীদের সংগঠন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রিজ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। মিলাদ শেষে শোক দিবসের উপর আলোচনা করার কথা থাকলেও তাড়াহুড়ো করে দোয়া করা হয়। জাতীয় শোক দিবসের দোয়া মাহফিলে আওয়ামিলীগ নেতাদেও উপস্থিতিতে জামাত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাইদীর উপর দোয়া করায় চেম্বার পরিচালক আলী হাসান নয়নের সাথে চেম্বার সভাপতি এস এ হামিদের তীব্র বাকবিতান্ডা হয়। চেম্বার সভাপতি এস এ হামিদ বাবু পরিচালক আলী হাসান নয়ন কে ইতর, বেয়াদপ, বলে তিরস্কার করেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠে চেম্বার সভাপতির বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রিজের পরিচালক জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলী হাসান নয়ন জানান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রিজের আয়োজনে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আছর বাদে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও চেম্বার পরিচালকদের উপস্থিতিতে মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়, মিলাদ শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করার কথা থাকলেও, চেম্বার সভাপতি এস, এ, হামিদ বাবু কাউকে আলোচনা করার সুযোগ না দিয়ে দোয়া করতে হুজুর কে নির্দেশ দেন, বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি জামায়াত নেতা আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাইদীর জন্য দোয়া করতে বলেন, কেউ কিছু বলার আগেই হুজুর দোয়া ধরেন এবং শেখ মজিবুর রহমানের পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ সময় নিয়ে দেলোয়ার হোসেন সাইদীর জন্য দোয়া করেন। এ সময় হুজুর দোয়ার মধ্যে বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে একজন করে সাইদীর জন্ম হোক এই দোয়া করেন।
আওয়ামী লীগ নেতা নয়ন আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সাহাদাৎ বার্ষিকীর দোয়া মাহফিলে একজন সাজা প্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের জন্য দোয়া চাওয়াটা চেম্বার সভাপতির নৈতিকতা বিরোধী কাজ বলে আমি মনে করি। দোয়া মাহফিলে চেম্বার পরিচালকের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও তার বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্ব দানকারী নেতা উপস্থিত ছিলেন, তাদের মতামত ছাড়া নৈতিকতা ও আদর্শ বিরোধী নির্দেশ চেম্বার সভাপতি একা দিতে পারেন না। আমি আওয়ামী লীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে এর তীব্র প্রতিবাদ করেছি এবং তার আদেশ প্রত্যাহার করতে বলেছি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হন এবং আমাকে ইতর এবং বেয়াদপ বলেন।
আলী হাসান নয়ন জানান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডঃ মতিয়ার রহমান এই মুহ্র্তে দেশের বাহিরে রয়েছেন, তিনি বিষয়টি অবগত হয়েছেন এবং রাতে ফোন দিয়ে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসক কে অবগত করে তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা বলবেন, বিষয়টি আলী হাসান নয়ন নিশ্চিত করেন।
চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামিলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক নজরুল হক পাটোয়ারী ভোলা বলেন, বর্তমান চেম্বার সভাপতি জেলা বিএনপির সাবেক অর্থবিষয়ক সম্পাদক, তাকে সভাপতি করার কারণে আজকে চেম্বার অব কমার্সকে কলঙ্কিত করার ধৃষ্টতা পেয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ সভাপতি জেলা যুবলীগের সভাপতি বলেন আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি এবং আমরা সভাপতিকে প্রশ্ন করেছি আপনি একক ভাবে এটি বলতে পারেন না।
লালমনিরহাট পৌর আওয়ামিলীগের সাধারন সম্পাদক ও চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম তপন বলেন, আমি মুজিব আদর্শের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে এর তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবী করছি। যেহেতু কালকে ১৫ই আগষ্টের মিলাদ ও দোয়ার জন্য নির্ধারিত এজেন্ডা ছিল, সেখানে একক ভাবে চেম্বার সভাপতি এটা করতে পারেন না, কিছু সুবিধাবাদী দলীয় পরিচালক সুবিধা নেবার জন্য সভাপতিকে ম্যানেজ করে চলেন বলেই আজকে এই ধৃষ্টতা সভাপতি দেখিয়েছেন, আমাদের অভিভাবক অ্যাডঃ মতিয়ার রহমান আজকে দেশে ফিরবেন তার সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এ বিষয়ে, চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জেলা বিএনপির সাবেক অর্থবিষয়ক সম্পাদক এস এ হামিদ বাবুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার সাথে কথা বলে সম্ভব হয়নি।