বগুড়ার সারিয়াকান্দি হাট বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। উপজেলা সদরের একমাত্র হাট এটি। কিন্তু হাটের কোনো নিজস্ব জায়গা না থাকায় হাটুরেদের অনেক দুর্ভোগ পোঁহাতে হয়। এরপরেও এ হাট থেকে সরকারের রাজস্ব বাড়ালেও, বাড়েনি সেবার মান। ফলে হাটটি এখন নাম সর্বস্ব হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উপজেলা সদরের সারিয়াকান্দি হাট বহুকালের পুরানো। সদরের লোকজন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে লোকজন আসতো এই হাটে। শনিবার মঙ্গলবার বসে এই হাট। সকাল থেকে শুরু হয়ে হাট চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। লোকজনের আনাগোনায় প্রায় ২ কিলোমিটার দূর থেকেই শোনা যেত হাটুরেদের সরগরম শব্দ। হাটের আশপাশ চায়ের দোকান গুলোতে হাটুরেদের বিভিন্ন রকম আলাপ চারিতায় মেতে উঠতেন হাটে আশা বিভিন্ন বয়সি লোকজন। কিন্তু এখন আর সে অবস্থা নেই। তবে হাটের কৃষিপন্য বিকিকিনির নির্ভরযোগ্য স্হান ছিলো সারিয়াকান্দি পাবলিক মাঠ।এ মাঠে ধান, পাট, গম, পিঁয়াজ, রসুন ভুট্টা, সরিষা, তিল, তিসি, জাউন, কাউন থেকে শুরু করে কৃষক উৎপাদিত পন্য এমনকি গরু ছাগলের জন্য কাঁচাঘাস-খড়ের রমরমা বেচাকেনা হতো। কিন্তু প্রায় ৮ বছর আগে নিয়মিত খেলাধুলার জন্য নির্ধারিত পাবলিক মাঠের ওই হাটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে হাটুরেরা বড় রকমের সমস্যায় পড়লেও থানা রোডের উপর বসানো হয় ওই হাট। তবে গরু ছাগলের কাঁচা ঘাস-খড় বিক্রির নির্ধারিত স্থান করে দেওয়া হয়, সরকারি বালক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে পরিত্যক্ত জায়গায়। সে সময় হতে সকাল থেকে শুরু করে আজও চলছে ঘাসের হাটটি। তবে এ হাটে কোন ছাউনি বা শেড ঘড় না থাকায় ঝড় বৃষ্টিতে দুর্ভোগ পোঁহাতে হয় হাটুরেদের। সারিয়াকান্দি থানা রোড কৃষি পন্য বিকিকিনির জন্য নির্ধারিত স্থান করে দেওয়া হলেও আশপাশ নেই কোন শেড ঘড়। এখানে হাটুরেদের ঝড় বৃষ্টিতে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। এছারাও বাইপাস সড়ক হিসেবে পরিচিত থানা রোডের এই সড়কটি সপ্তাহে ২ দিন হাট বসাতে পথচারী থেকে শুরু করে যাএী সাধারন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ-কষ্টে পড়েন। অপর দিকে হাঁস, মুরগি, কবুতর, পোষ্য প্রাণী কেনাবেচার স্হান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে সারিয়াকান্দি গোডাউন রোড। কিন্তু এ সড়কটিতে হাট বসাই যেমন আগত ক্রেতা বিক্রেতারা দুর্ভোগ কষ্ট পোঁহান তেমনি কষ্ট পোঁহান পথচারীরা এ থেকে পরিএাণ পেতে আবেদন নিবেদন করেও কোন কাজ হয়নি হাটুরেদের। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভূমি অফিসের গলিতে বসে সকাল বিকেল দুধের হাট। কাঁচা বাজারও বসে ভুমি অফিস ঘেষে এতে ভুমি অফিসে সেবা নিতে আসা লোকজনেরা যেমন কষ্ট করেন, তেমনি কষ্ট করেন উপজেলা ভুমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ হাটুরেরা। সারিয়াকান্দি পৌর এলাকার আওতায় এ হাটের জায়গা সংকটের কারণে হাটুরেদের নানা রকমের দুর্ভোগ নিত্যদিনের সঙ্গী হলেও কিছু যেন করার নেই কারই। তবে জায়গা জমি সল্পতায় হাটুরেদের দুর্ভোগ বাড়লেও আয় কমেনি এ হাটের। ২২ ইং সালে হাটের ইজারার দর ছিলো প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। এবার চলতি বছর সেখানে দর দেওয়া হয়েছে প্রায় ৩৭ লাখ টাকা।বছর ঘুরলেই হাটের আয় এভাবে বাড়লেও সর্বসাধারণের হাটের সুবিধা বাড়নি।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র মতিউর রহমান মতি বলেন, হাটের জায়গা তো অনেক। প্রায় ৫ একর ৩৪ শতক জমি হাটের নিজস্ব সম্পওি। তারপরেও হাটের জায়গা সংকুলান হচ্ছে না কারণ একটাই, অবৈধ দখলদারদের দৌরাত্ম্য। তাদের দৌরাত্ম্যর কারনে, হাটের অনেক জায়গা আজও বেদখল। উদ্ধার করতে গেলে মামলা মোকদ্দমার জালে আটকে ফেলা হয়। যার জন্য হাটের জমি জমা উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
মেয়র মতিউর রহমান মতি আরো বলেন, তবে এত কিছুর পরেও যেটুকু জায়গা আছে তাতে আধুনিক শেড ঘড় নির্মাণ করে, হাট-বাজারে আগতদের নিরাপদ-আরামদায়ক ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।