রাস্তা মেরামতের নামে লাখ লাখ টাকা লোপাট হচ্ছে। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা চোখে পড়ার মতো এবং সারা বছর জলাবদ্ধতা লেগেই থাকে। মাঝে-মধ্যে নিম্নমানের ইট-বালু দিয়ে রাস্তা মেরামত হলেও কিছুদিন না যেতেই ইট-পাথর-খোয়া উঠে গিয়ে আবার খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। অব্যবস্থাপনা আর পরিকল্পনার অভাবে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনগনের জীবনযাত্রা। এলাকার লোকজন প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের কাছে ধরনা দিলেও প্রতিকার মিলছে না। ‘অনিয়ম-দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে দায়সারাভাবে সংস্কারকাজ করার কারণে প্রতিবছরই বর্ষায় রাস্তা ভেঙে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনগণকে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করছে।’ জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘবে তাদের কোনো উদ্যোগ-তৎপরতা চোখে পড়ছে না। এমন অনেক অভিযোগ বিভিন্ন জেলাতেই পাওয়া যায়। যেমন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর। গত বছরের জুনে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ৮৪টি সড়কের প্রায় ১৮০ কিলোমিটার জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিন্তু সেসব রাস্তা আজও সারাই করা হয়নি। একটি সড়ক ভেঙে রীতিমতো ছোট একটা খাল হয়ে গেছে। ফলে কোনো ধরনের যানবাহনই সেখান দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। এছাড়াও অধিকাংশ সড়কের জায়গায় জায়গায় পিচ উঠে মাটি বের হয়ে গেছে। সড়কজুড়ে শুধু গর্ত আর গর্ত। সেখানে ভ্যান-রিকশা চালানোও ঝুঁকিপূর্ণ ও মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রমসাধ্য হয়ে উঠেছে। টানা এক বছর ধরে এভাবে রাস্তাগুলো পড়ে আছে। এলাকাবাসীর দিক থেকে এলজিইডি দপ্তরে বারবার জানানো হলেও কোনো সুরাহা মিলছে না। এটি উপজেলার লাখ লাখ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে। ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে এলাকার উৎপাদিত দ্রুত পচনশীল শাকসবজি, মাছ, দুধ কিংবা ভারী পণ্য আনা-নেওয়া দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। দিনের পর দিন এভাবে চলার কারণে এটি গোটা এলাকার গ্রামীণ অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সন্তানসম্ভবা কিংবা গুরুতর আহত বা অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার মতো জরুরি বিষয়গুলোও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমনিতেই ভয়াবহ বন্যার কারণে স্থানীয় দরিদ্র বাসিন্দারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সেই ক্ষতি থেকে দ্রুত উত্তরণের জন্য সরকারের অনেক আগেই সড়ক সংস্কার করা উচিত ছিল। কিন্তু তা আর হয় নি। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতির যুগে রাস্তাঘাটের এমন করুণ অবস্থা বর্তমানে ভাবাই যায় না। তাই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।