পাবনার চাটমোহর পৌরসভার আফ্রাতপাড়া মহল্লায় জাল দলিল তৈরি করে জমি দখল করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একইসাথে জাল দলিলের মাধ্যমে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে নামজারী করে নেওয়া হয়েছে। এই জমি উদ্ধারের জন্য জমির প্রকৃত মালিকরা দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
অভিযোগে জানা গেছে,আফ্রাতপাড়া মহল্লার মৃত আঃ লতিফের একটি দলিল মূলে (যার নং ৫০৯০,তাং ১২/০১/১৯৫৩ ইং) আফ্রাতপাড়া মৌজার ১১ নং ও ১৪ নং দাগের জমি জনৈক আঃ রাজ্জাক মীর ক্রয় করেন। পরবর্তীতে আঃ রাজ্জাক মীর সেই জমি জনৈক মোঃ মহসীনের নিকট বিক্রি করেন। মহসীন আলী ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে নিজ নামে ৮৪/২১-২২ নং নামজারি (খারিজ) করে নেন। কিন্তু আঃ রাজ্জাক মীর আঃ লতিফের যে দলিল মূলে এই জমি ক্রয় করেন এবং পরর্বীতে মহসীন আলীর নিকট বিক্রি করেন,সেই দলিলের কোন প্রকার অস্তিত্বই নেই। আঃ লতিফের ছেলে বুক্তভোগি আঃ রাজ্জাক বলেন,মহসীন আলীর নামজারীর বিরুদ্ধে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট মিস কেস দায়ের করা হলে,সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিসকেস খারিজ করে মহসীন আলীর নামজারী বহাল রাখেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগি আঃ রাজ্জাক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পাবনার আদালতে আপীল করেন। একইসাথে পাবনা জেলা রেজিস্ট্রারের নিকট ১২/০১/১৯৫৩ সালের ৫০৯০ নং দলিলের অনুলিপির জন্য আবেদন করেন। জেলা রেজিস্ট্রার পাবনা সদর সাব রেজিস্ট্রারকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলেন। পাবনা সদর সাব রেজিস্ট্রার মোঃ হাফিজুর রহমান খান গত ২৩/০৮/২০২২ ইং তারিখে তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন ১২/০১/১৯৫৩ সনের ৫০৯০ নং দলিলটি সৃষ্টি হয়নি। ফলে আঃ রাজ্জাক মীর আঃ লতিফের নিকট থেকে যে জমি ক্রয়ের দলিল সৃষ্টি করেছেন তা সঠিক নয়।
আঃ রাজ্জাক বলেন,সকল কিছু যাচাই বাছাই ও তদন্ত করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তাঁর আদেশে বলেছেন,যেহেতু ১৯৫৩ সালে ৫০৯০ নং দলিল সৃষ্টি হয়নি সেহেতু ওই দলিলের মাধ্যমে প্রাপ্ত সম্পত্তি মোঃ আঃ লতিফ প্রাং গত ২০/০৮/১০৮০ তারিখের ৩৪১৬ নং দলিলমূলে আঃ রাজ্জাক মীরের নিকট বিক্রয় করা এবং পরবর্তীতে আঃ রাজ্জাক মীর ১৫/০২/১৯৮২ খ্রিঃ ১০৫৮ নং দলিলমূলে মোঃ মহসীন আলীর নিকট বিক্রয় করা সঠিক হয়নি। একইসাথে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক মোঃ আঃ রাজ্জাক কর্তৃক দায়ের করা ৭৫/২১-২২ নং মিসকেসের আদেশটি সঠিক হয়নি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহসীন আলীর ৮৪/২১-২২ নং নামজারীর মাধ্যমে সৃষ্ট খারিজকৃত সম্পত্তি মূল খতিয়ানে ফেরত দেওয়ার জন্য আদেশ দেন এবং প্রয়োজনী পদক্ষেপ নিতে এসি ল্যান্ডকে আদেশ দেন।
ভুক্তভোগি আঃ রাজ্জাক বলেন,আমার পিতা আঃ লতিফ প্রাং এর জমি জাল দলিলের মাধ্যমে জবর দখল করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহোদয়ের আদেশ বাস্তবায়ন করা হচ্ছেনা। এ বিষয়ে আমি সংবাদ সম্মেলনও করেছি। মহসীন আলীর পক্ষে এলাকার প্রভাবশালী একটি গোষ্ঠি জড়িত থাকায় আমরা হতদরিদ্র ব্যক্তিরা অসহায় হয়ে পড়েছি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মহসীন আলীর সাথে বারবার যোগাযোগ করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছাঃ তানজিনা খাতুন বলেন, ইতোমধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহোদয়ের আদেশের বাস্তবায়ন করা হয়েছে। খারিজকৃত জমি মূল খতিয়ানে ফেরত দেওয়া হয়েছে। জমি দখলমুক্ত করা বা জমি দখল করার বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়।