পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ ভাগ শুল্ক আরোপের রেশ কাটতে না কাটতেই এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্কায়ন মূল্য বাড়িয়েছে ভারত সরকার। পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ যেমন বাড়বে তেমনি দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিতে প্রভাব পড়বে তেমনি দেশের বাজারে পণ্যটির দাম বাড়বে বলে জানিয়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানিকারকরা হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারকদেরকে মুঠোফোনে এই তথ্য জানিয়েছেন।
শনিবার হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে প্রকারভেদে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় পেঁয়াজ।
হিলি স্থলবন্দরেরর পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন জানান,দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রেখেছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। এরই মাঝে ভারতে বন্যার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সেদেশের বাজারেই পেঁয়াজের সরবারহ কমে গেছে। এই কারণে সে দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ও পেঁয়াজ রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে গত শনিবার ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির ক্ষেত্রে ৪০ ভাগ শুল্ক আরোপ করে। কত টাকা শুল্ক দিতে হবে সেটি নিশ্চিত না হওয়ায় রোববার বন্দর দিয়ে নতুন শুল্ক আরোপের কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। কেজি প্রতি প্রকারভেদে ৫ থেকে ৭ টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সোমবার থেকে আবারো বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। তবে কেজি প্রতি প্রকারভেদে ৫ থেকে ৭ টাকা বাড়তি শুল্ক দিতে হওয়ায় দেশের বাজারে পণ্যটির দাম কিছুটা বাড়ছিলো। এরপরেও দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানি অব্যাহত রেখেছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। এরই মাঝে গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) পেঁয়াজ রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে ভারত সরকার।
বাংলাহিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক রবিউল ইসলাম সুইট জানান,শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা মুঠোফোনে বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। এতদিন পেঁয়াজ রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা যে ১৫০/২০০ মার্কিন ডলার মূল্যে পেঁয়াজের এলসি খুলতাম সেই মূল্যের ওপর ৪০ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করেই পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানি করতো ভারত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তারা নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সেটি হলো যে মূল্যেই এলসি করা হোক না কেন ভারতীয় কাস্টমসে প্রতি টন পেঁয়াজের ২০৫ মার্কিন ডলার শুল্কায়ন মূল্য ধরে শুল্ক পরিশোধ করেই পেঁয়াজ রপ্তানি করতে হবে। ভারতের কৃষি পণ্যের মূল্য নির্ধারণী সংস্থা নতুন এই শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে।
তিনি আর বলেন,পুরানো বা নতুন সব এলসির ক্ষেত্রেই এই শুল্কায়ন মূল্য পরিশোধ করতে হবে। এর ফলে বর্তমানে পেঁয়াজের কেজি প্রতি যে প্রকারভেদে ৫ থেকে ৭ টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হতো সেটি বেড়ে ৯ টাকার মত পরিশোধ করতে হবে। তবে সেটি চুড়ান্ত সীদ্ধান্ত নয়। পরতর্বীতে নোটিফকেশনের মাধ্যমে জানা যাবে।
হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে,শনিবার ৪০ ভাগ শুল্কায়নে বন্দর দিয়ে ভারতীয় ৩৭ টি ট্রাকে এক হাজার ৯৩ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।