বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বলেছেন, জয় বাংলা শ্লোগান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।বহুত্যাগ ও আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সম্মানিত স্থানে বসানো হয়েছে। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বহু আলোচনা, সেমিনার বক্তব্য হয় কিন্তু চর্চা কম হয়। বঙ্গবন্ধুর চর্চা নিয়ে আমাদের মধ্যে এখনও ঘাটতি রয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে জানতে পারবো যদি তার রাষ্ট্রীয় দর্শন গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা যায়। তার জন্য আমাদের প্রথমেই ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনে ফিরে যেতে হবে।
তিনি বলেছিলেন, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এই মুক্তির লক্ষ্যেই আমাদের ভৌগলিক স্বাধীনতার প্রয়োজন দেখা দেয়।স্বল্প সময়ে যে সংবিধান রচনা করেছিলেন, তার প্রস্তাবনা পড়ার চেষ্টা করলেই বঙ্গবন্ধু কি ধরনের বাংলাদেশ চেয়েছিলেন, কি ধরনের মুক্তির সংগ্রাম চেয়েছিলেন তা অনুভব করতে পারবো।
তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা ঘোষনা করেছেন। দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের অবস্থান খুবই দুর্বল। তিনি ১৯৭৩-৭৪ সালের বক্তব্যগুলো স্পস্টভাবে উল্লেখ করেছেন, এদেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষ দুর্ণীতি করে না। দুর্ণীতি করে ৫% শিক্ষিত মানুষ। আমাদের শপথ নিতে হবে বঙ্গবন্ধুর দর্শনের উপর ভিত্তি করে দুর্ণীতি, স্বজনপ্রীতি করবো না। ঘুষখোরদের সাহায্য করবো না। তাই চাই আত্ম সমালোচনা, আত্ম উপলব্ধি। তবেই বাংলাদেশ আলোকিত হবে।
শনিবার সকাল ১০টায় দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী রংপুর বিভাগের সহযোগিতায় ও বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী দিনাজপুর জেলা শাখার উদ্যোগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু-আলোচনা ও চর্চা’ শীর্ষক একক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম উপর্যুক্ত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ১৯৭১ গণহত্যা, নির্যাতন, আর্কাইভ ও বঙ্গবন্ধু যাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন।
এসময় অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধুর দর্শন সমন্ধে যে জ্ঞান অর্জন করলাম তা বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে হবে। তিনি স্মরণ করেন ১৯৭৭সালের এই দিনাজপুর কারাগারে আমি ফাঁসির কক্ষে বন্দি ছিলাম। মুক্ত হওয়ার পর যে মানুষটি আমাকে জড়িয়ে ধরে তার বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানের একক আলোচক বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এর পিতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রয়াত এম. আবদুর রহিম। তিনি আমাকে পিতৃতুল্য ভালোবাসা দিয়ে আবদ্ধ করেছিলেন। তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে আজ ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন আহ্বায়ক বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মোজাম্মেল বিশ্বাস। বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনি সাধারন সম্পাদক মুর্শিদা বিনতে রহমান, অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব আলী ছায়েদ, গনহত্যা যাদুঘরের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চৌধুরী শহীদ কাদের।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন কলেজ ও স্কুলের শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেনিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।