সিরাজগঞ্জের এস, এম, নাঈম রিপাবলিক অব কাজাখস্তান সরকারের সম্মানজনক উচ্চশিক্ষা বৃত্তি পেয়ে 'আল-ফারাবি কাজাখ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি'তে আন্ডারগ্রেজুয়েট প্রোগ্রামে অধ্যয়নের জন্য মনোনীত হয়েছেন। কাজাখস্তান সরকারের বিজ্ঞান ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে আয়োজিত এ সম্মানজনক স্কলারশিপ প্রোগ্রামে সম্পূর্ণ বিনা বেতনে পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগ, বাসস্থান সুবিধা এবং মাসিক ভাতা প্রদান করা হবে। আল-ফারাবি বিশ্ববিদ্যালয় দেশটির ১নং র্যাংকিং-এ থাকা একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যার ছঝ ঊসবৎমরহম ঊঁৎড়ঢ়ব ধহফ ঈবহঃৎধষ অংরধ জধহশরহম #১৬ (২০২২ সাল), ছঝ অংরধ জধহশরহম #৪৪ এবং ছঝ ডড়ৎষফ জধহশরহম #১৫০ (২০২৩ সাল) সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের 'দৈনিক আমাদের সময়' এর রায়গঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ও 'দৈনিক কলম সৈনিক' পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মো: আশরাফ আলী ও ডা: নাসিমা সুলতানার (ঝঅঈগঙ) বড় ছেলে এস, এম, নাঈম নটর ডেম কলেজ, ঢাকা (বিজ্ঞান বিভাগ) হতে ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়। নিয়মিত উপস্থিতির জন্য সে নটর ডেম কলেজ হতে 'চবৎভবপঃ অঃঃবহফধহপব ঈবৎঃরভরপধঃব'- অর্জন করে। এর আগে আর.ডি.এ. ল্যাব: স্কুল এ- কলেজ, বগুড়া (বিজ্ঞান বিভাগ) হতে এসএসসি পরীক্ষা-২০২০ এ ট্যালেন্টপুল গ্রেডে বৃত্তি এবং রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের মেধাতালিকায় ২০ তম স্থান অর্জন করে। সে ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতেও বৃত্তি পেয়েছে। নাঈম বিভিন্ন অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করতে ভালোবাসে। ২০১৮ সালে, ৮ম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের আঞ্চলিক পর্যায়ে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে 'চ্যাম্পিয়ন অফ দ্যা চ্যাম্পিয়ন্স' নির্বাচিত হয়; জাতীয় পর্যায়ে ১ম রানার আপ হয় এবং সমগ্র বাংলাদেশ হতে নির্বাচিত সেরা ২০ জনকে নিয়ে ঢাকার 'ন্যাশলান ইন্সটিটিউট অব বায়োটেকনোলজি'তে আয়োজিত '৪র্থ জাতীয় বায়োক্যাম্পে' অংশগ্রণের সুযোগ পায়। সেখানে আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের প্রস্তুতি হিসেবে জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন প্রায়োগিক ক্ষেত্রের সাথে সে পরিচিত হয় এবং আধুনিক জীববিজ্ঞানের গবেষণার ব্যাপারে সে আগ্রহী হয়ে ওঠে। নাঈম জানায়, "বায়ো-ক্যাম্পের দিনগুলো আমার জন্য একটা ব্লেসিং। সেখানেই বাংলাদেশের কিছু অসাধারণ মানুষের সাথে পরিচয় হয় এবং উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে একটা স্বপ্নের জন্ম হয়। "আল-ফারাবি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপলব্ধ সকল বিষয়ে অধ্যয়নের অফার থাকায় নাঈমের প্রাথমিক পছন্দ 'বায়োটেকনোলজি' ডিপার্টমেন্ট। এছাড়াও সে ২০১৯ সালে 'বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে' আঞ্চলিক পর্যায়ে 'চ্যাম্পিয়ন' হয়। কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখা নাঈম 'ইৎরঃরংয ঈড়ঁহপরষ' কর্তৃক পরিচালিত প্রজেক্ট 'ঈড়হহবপঃরহম ঈষধংংৎড়ড়স' এর শিক্ষার্থী হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ইত্যাদি দেশের স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে অনলাইন কার্যক্রম ও ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করে এবং ২০১৯ সালে (২০শে সেপ্টেম্বর থেকে ১লা অক্টোবর) 'ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঝঃঁফবহঃং' ঊীপযধহমব ধহফ ঠরংরঃ চৎড়মৎধসসব' এ অংশগ্রহণ করে নিজ স্কুলের তত্ত্বাবধানে ভারতের 'খধশংযসরঢ়ধঃ ঝরহমযধহরধ অপধফবসু, কড়ষশধঃধ' এ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে অবস্থান ও কলকাতায় শিক্ষা সফরের সুযোগ পায়। কলকাতায় তার হোস্ট ফ্যামিলি ডা: হুমায়ুন কবিরের পরিবারের আতিথেয়তাকে সে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৮, '১৯-পরপর দুই বছর উপজেলা পর্যায়ের 'শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী' নির্বাচিত হয়। পাশাপাশি সে 'জাতীয় সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা'য় অংশগ্রহণ করে ২০১৭ সালে গণিত ও কম্পিউটার এবং বাংলাদেশ স্টাডিজ ও মুক্তিযুদ্ধ দুইটি বিষয়ে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ১ম স্থান অর্জন করে এবং বিভাগীয় পর্যায়ে 'গণিত ও কম্পিউটার' বিষয়ে ৩য় স্থান করে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালেও সে ওই প্রতিযোগিতায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে। সেই সাথে '৪০ তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহে' বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে সে উপজেলা পর্যায়ে ২য় স্থান অর্জন করে। পড়াশোনার পাশাপাশি নাঈম সহঃপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণকারী। এস কে এফ ফার্মাসিউটিক্যালস কর্তৃক আয়োজিত 'স্বপ্ন আঁকি' চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় 'সেরা ক্ষুদে শিল্পী' নির্বাচিত হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করে এবং বিখ্যাত শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার কর্তৃক প্রশংসিত হয়। নাঈম ২০১৮ সালে 'বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনের' জাতীয় পর্যায়ের বিতর্ক উৎসবে এবং ২০১৯ সালে বিভাগীয় পর্যায়ের বিতর্ক উৎসবে অংশগ্রহণ করে। এ ছাড়া জাতীয় দিবসগুলোতে স্কুল ও উপজেলা পর্যায়ে আয়োজিত বক্তৃতা, রচনা প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতি বছর একাধিক পুরস্কার অর্জনের কৃতিত্ব রয়েছে তার। তার সাফল্যে রায়গঞ্জ প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ অভিনন্দন জানিয়েছেন। নাঈম জীবনে একজন ভালো মানুষ হয়ে উঠতে চায়; ভালোবাসে বই পড়তে, বাগান করতে আর বক্তৃতা ও উপস্থাপনা করতে। নাঈম রায়গঞ্জ উপজেলার ধানঘড়া ইউনিয়নের তেলিজানা গ্রামের মোঃ হাবিবুর রহমানের পৌত্র। তার সার্বিক সাফল্যের জন্য সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া জানিয়ে তার স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষসহ সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা, সহপাঠী, পরিবার, স্কলারশিপের জন্য কাগজ-পত্র প্রস্তুতিতে বিভিন্ন ধাপে সহায়তাকারী সকল কর্মকর্তা এবং প্রয়াত শিক্ষক মো: হাবিবুর রহমানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে নাঈম জানায় সে একটি সহজ-সরল তথাপি কার্যকরী জীবন যাপন করে তার আশেপাশের মানুষের জীবনে সু-প্রভাব রেখে যেতে চায় এবং অস্তিত্ব সচেতন এক মুসলিম বাঙালি হয়ে উঠতে চায়। নাঈম বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আল-ফারাবি বিশ্ববিদ্যালয় ও কাজাখস্তান সরকারের উচ্চশিক্ষা বৃত্তির ব্যাপারে নাঈম জানায়, "আলমাতি শহরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টির রয়েছে বিশ্বজোড়া গ্রহণযোগ্যতা। ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালটিতে বর্তমানে বিশ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র জমা, অনলাইন টেস্ট ও অনলাইন ইন্টারভিউ ইত্যাদি ধাপসমূহ সম্পন্ন করে বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার আবেদনকারীদের মধ্য থেকে এ বছর সর্বমোট ৫৫০ জনকে কাজাখস্তানের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য মনোনীত করেছে মন্ত্রণালয়ের স্কলারশিপ কমিটি। ফলাফল ঘোষণা কার্যক্রম চলার কথা ২৫ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত।" এস.এম নাঈম সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।