নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন 'আনসার আল ইসলাম' এর খুলনা, বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলের দাওয়াতী শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত তরিকুলসহ ৫ সদস্যকে বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গত রাতে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এর তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৬ এর অভিযানে বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর অঞ্চল হতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন 'আনসার আল ইসলাম এর খুলনা, বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলের দাওয়াতী শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত মোঃ তরিকুল ইসলাম (২৩), পিতা-মৃত কামাল গাজী, পিরোজপুরসহ, মোঃ আকাশ থে আব্দুল্লাহ (২৩), পিতা-গাউছ মোল্লা, গোপালগঞ্জ,, তাজিমুদ্দিন জেসীম উদ্দীন (২১), পিতা-মোহাম্মদ জাকির ফকির, গোপালগঞ্জ,, ইসমাইল হাসান অনিক (২০), পিতা- মতিউর রহমান, মদারীপুর ও, মোঃ রিপন (২০), পিতা-সৈয়দ আহাদুজ্জামান, গোপালগঞ্জ বাগেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় উগ্রবাদী পুস্তিকা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম সংক্রান্ত নোট বই।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেপ্তারকৃতরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন 'আনসার আল ইসলাম' এর সদস্য। তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন 'আনসার আল ইসলাম' কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। তারা বিভিন্ন সময় অনলাইনে তামিম আল আদনানী, হারুন ইজহার, গুনবীসহ বিভিন্ন আধ্যাত্মিক নেতার বক্তব্য দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সদস্যদের সংগঠনে যোগদান করে। পরবর্তীতে তারা সংগঠনের সদস্য সংগ্রহে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল।
এছাড়াও তারা সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভুল তথ্য প্রদান করে তাদের আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন মাদ্রাসা ও সদস্যদের নিকট থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ করতো। ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য সদস্যদেরকে উগ্রবাদী করে তুলতো।
তরিকুল গোপালগঞ্জের একটি মসজিদে ইমামতি করতো। সে ২০২১ সালে দিঘলীয়াতে একটি মাদ্রাসয় অধ্যয়ণকালীন 'আনসার আল ইসলাম' এর ওমর নামের একজন উচ্চপদস্থ সদস্যের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ‘আনসার আল ইসলাম' এ যোগদান করে।
আব্দুল্লাহ' বাগেরহাটের একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়ণরত ছিল।২০২১ সালে খুলনার দিঘলীয়াতে একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালীন গ্রেপ্তারকৃত তরিকুলের মাধ্যমে 'আনসারআল ইসলাম' এ যোগ দেয়। সে দিঘলীয়াতে মাদ্রাসায় অধ্যয়ণকালীন তরিকুলের সাথে অন্যান্য সহপাঠীদের মধ্যে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরবর্তীতে বাগেরহাটে মাদ্রাসায় অধ্যয়ণকালীনও দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। দাওয়াতী কার্যক্রমে তার পারদর্শিতার জন্য খুলনা ও বাগেরহাট অঞ্চলের দাওয়াতী শাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তাজিমুদ্দিন গোপালগঞ্জের স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ইমামতি করতো। সে দিঘলিয়াতে একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালীন গ্রেপ্তারকৃত আবদুল্লাহর সহপাঠী ছিল। সে ২০২১ সালে আব্দুল্লাহ'র মাধ্যমে আনসার আল ইসলাম এর মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়। সে বিভিন্ন সময় তরিকুল ও আব্দুল্লাহ'র সাথে তার মাদ্রাসা/বাসায় মিটিং করতো। সে তরিকুল এর কাছ থেকে বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা, মুসলমানদের উপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সংগ্রহ করতো।
ইসমাইল গোপালগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়ণরত ছিল। সে তরিকুলের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ‘আনসার আল ইসলাম' এ যোগদান করে। রিপন ২০২২ সালে আব্দুল্লাহ'র মাধ্যমে আনসার আল ইসলাম এর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে। গ্রেপ্তারকৃত রিপন বিভিন্ন সময় আব্দুল্লাহ'র সাথে দেখা করে বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা সংগ্রহ করে সংগঠনের দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতো।