টানা তিন মাস বন্ধ থাকার পর শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে আবারো দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ সব ধরনের বনজীবীদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড সুন্দরবন। সকাল থেকে বনজীবী ও দর্শনার্থীরা সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন। ইতোমধ্যে জেলে, ট্যুর অপারেটর, লঞ্চ ও বোট চালকরা সুন্দরবনের প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সুন্দরবনের আশাপাশ এলাকার ইকো কটেজগুলোও প্রস্তুতি নিচ্ছে পর্যটক বরণে।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবন বর্তমানে ১১৪টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, দুই লাখ হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী, সুন্দরীসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল, ১৩ প্রজাতির অর্কিড ও ৩০০ প্রজাতির পাখি রয়েছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ১৮৭৪ বর্গ কিলোমিটার জলভাগে কুমির, ৬ প্রজাতির ডলফিনসহ ২৯১ প্রজাতির মাছ রয়েছে।
এ নিষেধাজ্ঞার সময়ে পর্যটকসহ বনজীবীদের কোলাহল মুক্ত থাকায় সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী অবাধ বিচরণের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন প্রজনন করতে পেড়েছে। ম্যানগ্রোভ এই বনের বন্যপ্রাণী ও মৎস্য সম্পদসহ জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার শেষ মুহূর্তে বন বিভাগের কাছ থেকে পাস-পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশে সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে ট্যুর অপারেটরসহ সব ধরনের বনজীবীরা। সুন্দরবন উন্মুক্ত করে দেওয়া হলেও পর্যটকসহ বনজীবীদের জন্য পানির বোতল, চিপসের প্যাকেটের মতো সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সুন্দরবন লাইভ ট্যুর অপারেটরের মালিক গোলম রহমান বিটু জানান, টানা তিন মাস বন্ধ থাকার পর শুক্রবার সকাল থেকে আবারো সুন্দরবন উন্মুক্ত হওয়ার খবরটি ট্যুর অপারেটরদের জন্য আনন্দের। সুন্দরবন উন্মুক্ত হওয়ার খবরে দেশি- বিদেশি পর্যটকদের চাপ বেড়েছে। প্রায় সব ট্যুর অপারেটরের পর্যটকবাহী লঞ্চ ও বিলাসবহুল ক্রুজারের ক্যাবিন এক সপ্তাহ আগেই বুক হয়ে গেছে। পর্যটকদের চাপ এভাবে শীত মৌসুমের আগ পর্যন্ত থাকলে তিন মাস বন্ধের ক্ষতি আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, প্রতি বছরই বন্যপ্রাণী ও মাছের প্রজনন মৌসুমে তিন মাস দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ সব ধরনের বনজীবীদের প্রবেশে বন্ধ ও মৎস্য সম্পদ আহরণে নিষেধাজ্ঞার জারি করা হয়ে থাকে। কোলাহল না থাকায় সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী ও মৎস্য প্রজাতি অবাধ বিচরণের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন প্রজনন করতে পেড়েছে। প্রকৃত চিত্র হচ্ছে নিষেধাজ্ঞার সময়ে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য প্রাণ ফিরে পায়। ফলে ম্যানগ্রোভ এই বনের বন্যপ্রাণী ও মৎস্য সম্পদসহ জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হয়েছে।বন বিভাগ থেকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি নেওয়ার সময় পর্যটক, ট্যুর অপারেটর ও বনজীবীদের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।