বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যে ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একইসাথে মিথ্যে মামলা দায়েরকারী মইদুর রহমান বাকিকে গ্রেপ্তারের দাবি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবিদ হাসান, একে আরাফাত, ছাব্বির হোসেন ও রক্তিম হাসান। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থী আবিদ হাসান বলেন, ২০১৭ সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় বহিস্কৃত মইদুর রহমান বাকি অতিসম্প্রতি ৪২ জন সাধারণ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মিথ্যে ও হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করেছেন। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ মিথ্যে ও হয়রানীমূলক মামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে মিথ্যে মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট রাতে মইদুর রহমান বাকির নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ও শেরে বাংলা হলে সশস্ত্র হামলা চালায়। হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আটজন শিক্ষার্থী গুরুত্বর জখমের ঘটনায় বন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় মইদুর রহমান বাকি আসামি হলেও তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার না করে, তার দায়ের করা সাজানো মিথ্যে মামলায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি করছে।
মইদুর রহমান বাকি চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী দাবি করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে মইদুর রহমান বাকিকে গ্রেপ্তারের দাবি করা হয়। পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মইদুর রহমান বাকির দায়ের করা মিথ্যে ও হয়রানীমূলক মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের চেষ্টার অভিযোগে নগরীর আরশেদ আলী গলির ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে মইদুর রহমান বাকিসহ তার ছয়জন সহযোগিকে আটক করেছিলো মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ওইসময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি এন্টি জ্যামার ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, পাঁচটি ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ব্লুটুথ ইনডাকশন (ইয়ারফোন), প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজে ব্যবহৃত ১১টি মোবাইল সেট (সিমসহ), অতিরিক্ত দুইটি সিমকার্ড, একটি হেডফোন এবং তিনটি পেন ড্রাইভ উদ্ধার করা হয়েছিলো। ওইসময় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর চালিতাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা গাজী হাফিজুর রহমানের ছেলে মইদুর রহমান বাকি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলো। ডিবি পুলিশের অভিযানে আটকের পর মইদুর রহমান বাকিকে বহিঃস্কার করা হয়। যদিও পরবর্তীতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার সুযোগ দেয়া হয়। আর এ সুযোগ পেয়েও পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়াসহ নিয়ম না মানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুণঃভর্তির সুযোগ নেই জানিয়ে দিলে তার ছাত্রত্ব বাতিল হয়। এরপর থেকে দীর্ঘদিন সে (মইদুর রহমান বাকি) কথিত নেতা সেজে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের অবস্থান জাহির করে আসছিলা। গত ৫ আগস্ট রাতের ঘটনার পর থেকে তাকে ক্যাম্পাসে দেখা না গেলেও হঠাৎ করেই সে আদালতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা তাহমিদ মঞ্জু, শরিফুল ইসলাম, আল সামাদ শান্ত, আবিদ হাসান, রক্তিম হোসেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের আসামি করা হয়েছে।