প্রধান শিক্ষক শিক্ষক সঞ্জয় কুমান রায়ের নানা অনিয়ম আর দায়িত্বে অবহেলায় খুড়িয়ে চলছে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কাশিয়াবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমারসহ সকল (৪ জন শিক্ষক) সহকারী শিক্ষকদের কর্মস্থলে দেরীতে আসা যেন নিত্য দিনের অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। ওই প্রধান শিক্ষক নানা দাম্ভকতায় বিদ্যালয়টি পরিচালনা করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার মান দিন দিন কমে যাচ্ছে। বিদ্যালয়টির ব্যাপারে স্থানীয় অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত।
এছাড়াও বিদ্যালয়টির উন্নয়ন বরাদ্দের কাজেও নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রতি বছর স্লিপ আর রুটিন মেইনটেন্স এর বরাদ্দকৃত অর্থ উপরমহলকে ম্যানেজ করে নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে পুরো টাকা পকেটস্থ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বছর ক্ষুদ্র মেরামতের অর্থও একই ভাবে নয়ছয় করার মানসিকতা আছে ওই প্রধান শিক্ষকের।
সরেজমিনে রোববার সকাল ৯ টা ১৫ মিনিটে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যালয়টির অফিস কক্ষ তালা দেওয়া। প্রধান শিক্ষকসহ কোন শিক্ষকেই তখনো আসেন নাই। অথচ নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯ টার আগেই শিক্ষকদের আসার কথা। শ্রেনী কক্ষের বারান্দার কেচি গেট খোলা থাকলেও ১ম শেনীর কক্ষ তালা বদ্ধ অবস্থায়। ফলে ১ম শ্রেনীর কয়েকজন শিক্ষার্থী বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আবার মাঠের মধ্যে দৌড় ঝাঁপ খেলছে। ১ম শ্রেনীর একজন শিক্ষার্থী বাইজিদ আহমেদ কেচি গেটের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। শ্রেনী কক্ষ তালা থাকায় সে ক্লাসে ঢুকতে পারছে না। তাকে স্যারদের কথা জানতে চাইলে বলে স্যারেরা তো ১০টা আগে আসে না।
৯ টা ২১ মিনিটে প্রধান শিক্ষকের মুটোফোনে ফোন দিলে তিনি ফোনে কথা বলা অবস্থায় হন্তদন্ত হয়ে স্কুলে আসেন। সাংবাদিক দেখেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। দেরীতে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে দাম্ভিকতার সাথে বলতে থাকে বাংলাদেশের কোন অফিস সময় মত খোলে। খালি শিক্ষকরা দেরী করলে দোষ। যান আপনার কি করার আছে করেন। তখনো অন্যান্য শিক্ষকরা আসে নাই। এরপর ৯ টা ৪৮ মিনিটে ২ জন শিক্ষকের আর্বিভাব ঘটলো। তারপর ৯ টা ৫৫ মিনিটে আর একজন শিক্ষক আসলো। দেরী আসার কারণ জানতে চাইলে তারা সকলে বলে বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। তাছাড়া বাড়ীতে তো কাজ থাকে।
তারাগঞ্জ উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ও ওই বিদ্যালয় ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাককে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ে দেরীতে আসা কাম্য নয়। দাম্ভিকতা দেখানো তার উচিত হয়নি। দেখি বিষয়টি কি করা যায়। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।