ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে মহাসড়কের দু’পাশে প্রায় ১২ কিলোমিটার এক শ্রেনীর অসাধু কাঠ ব্যাবসায়ীরা আইনের তোয়াক্কা না করে প্রায় ৯ মাস ধরে মহাসড়কের দু,পাশে গাছ কেটে যত্রতত্র গাছের গুঁড়ি ফেলে রেখেছে। মহাসড়কটি সর্বসময় ব্যস্ততম সড়কে এভাবে গাছের গুড়ি রাখার কারণে যানবাহন চলাচলে মারাতœক ভাবে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। জনসচেতনার অভাবে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা, পথচারিরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
ব্যস্ততম মহাসড়কের দুইপাশ দখল করে গাছের গুঁড়ি রেখে যানবাহনসহ জনচলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি করে প্রতিনিয়ত সড়কে দূর্ঘটনা ঘটছে ও দূর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে এমন ঘটনা ঘটেছে। এতে পায়ে হেঁটে মানুষ যাতায়াতসহ বাস, ট্রাক, ইজিবাইক, রিকশা, মটরসাইকেল চলাচলেও মারাতœক বিঘেœর সৃষ্টি হচ্ছে। আশঙ্কা রয়েছে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। ঠিকাদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিকার পাঁচ্ছেন না ভুক্তভোগী যানবাহন। এ মহাসড়ক দিয়ে স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজগামী শত শত শিক্ষার্থী এবং দিন রাত ২৪ ঘন্টা হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে থাকে। বিশাল বিশাল গাছ রাস্তার দুইপাশ দখল করে সারিবদ্ধ ভাবে ফেলে রাখা হয়েছে। অনেক স্থানে সড়কের উপরে মাটি রেখে দেবার কারণে চলাচল করা যাচ্ছে না।
বিশেষ করে কালীগঞ্জ বৈশাখি তেলপাম্প থেকে বারোবাজার ফুলবাড়ি পর্যন্ত সড়কের দু,পাশে বিভিন্ন স্থানে অসাধু ব্যবসায়িরা গাছের বড় বড় গুড়ি ফেলে রেখেছে প্রায় ৯ মাস। রাতের বেলায় বেশি সমস্যা হয় পথ চারিরা চলার সময় পায়ে বেধে পড়ে গিয়ে আহত হয়। এই অংশের মহাসড়ক ৪ বা ৬ লেনের রাস্তা সম্প্রসারনের জন্য পুরাতন গাছ কাটা হয়েছে। এতে মহাসড়কের দুই পাশে অসংখ্য বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই অংশ দিয়ে চলাচলের সময় যানবাহন গর্তে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন যানবাহনের চালকেরা ও সড়কের পাশে ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়ির ভুক্তভোগিরা দ্রুত গর্তগুলো ভরাট ও গাছের গুড়ি সরিয়ে ফেলার দাবি জানিয়েছেন। আবার সড়কের উপরে ও পাশে যে বড় বড় গাছের গুড়ি রাখা হয়েছে তাতে করে চলাচল একবারেই করা যাচ্ছে না। গাছের গুড়ির কারণে দুটি যানবাহন সাইড দিতে গেলে ব্রেক করে আস্তে আস্তে যেতে হয়। এই মহাসড়টি সম্প্রসারনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দিয়েছেন। ঝিনাইদহ থেকে কালীগঞ্জ শেষ প্রান্ত ফুলবাড়ি পর্যন্ত। সড়কের দু,পাশে গাছ কর্তন করা হয়েছে। মহাসড়কের পাশে কোন গাছ নেই। সারা বাংলাদেশের একমাত্র যোগাযোগের প্রধান সড়ক এই সড়কটি, কিন্তু ঠিকাদারদের গাফলতির কারণে সড়কের পাশে যে ভাবে বড় বড় গাছের গুড়ি ও গর্ত করে রাখা হয়েছে তাতে করে চলাচলে মারাতœক ঝুকিতে পরিনত হয়েছে। দূর্ঘটনায় মারাগেছে ও অনেকেই আহত হয়েছে, আবার দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কের পাশে গর্তের মধ্যে লাঠির মাথায় লাল কাপড়, শুকনা গাছের পাতা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ সড়কটি সম্প্রসারনের জন্য ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ ঝিনাইদহ অংশের ৩০ কিলোমিটারের গাছ টেন্ডারের মাধ্যমে শত বছরের গাছগুলি বিক্রি করে দিয়েছে। ঝিনাইদহ থেকে যশোর অভিমুখি ফুলবাড়ি পর্যন্ত অসংখ্য গাছ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের লোকজন কেটে ফেলেছে। চলতি বছর ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে গাছগুলো কাঁটার কাজ অব্যাহত রয়েছে। এসব গাছ কাটতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন সড়কের পাশে বড় বড় গর্ত খুড়ে রেখেছে। গর্ত খুঁড়ে গাছ কেটে গাছের গোড়া ফেলে রেখেছে, কিন্তু গর্ত ভরাট করা হচ্ছে না ফলে রাস্তার মাটি ও পাকারাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে। সড়কের পাশে খুঁড়ে রাখা গর্তগুলোতেই প্রায়ই বিভিন্ন যানবাহন পড়ে যাচ্ছে। সড়কের পাশে গর্তে বাইসাইকেল, মটরসাইকেল আরোহী পড়ে গুরুতর আহত হচ্ছে এবং একজন সড়কের পাশে মটর সাইকেল নিয়ন্ত্রন হারিয়ে মোটা গাছের গুড়িতে ধাক্কা মেরে নিহত হয়। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরে ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী কড়াই গাছগুলো রক্ষা করে ৬ লেন রাস্তা নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছিল ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল।
মানববন্ধনে ফওজুর রহমান বলেছিলেন, যশোর-খুলনা মহাসড়কের কালীগঞ্জের বৈশাখী তেলপাম্প থেকে মোবারকগঞ্জ চিনিকল পর্যন্ত এবং বৈশাখী তেল পাম্প থেকে ভুষণ সড়কের জনতা ব্যাংক মোড় পর্যন্ত প্রায় শতাধিক শতবর্ষী কড়ই গাছ রয়েছে। শতবর্ষী এই কড়ই গাছ গুলো কালীগঞ্জের ঐতিহ্য। দেশ বিদেশের অনেকেই এই কড়ই গাছগুলো সম্পর্কে জানেন। তারা দাবি তোলেন, শুকনা এবং ঝুঁকিপুর্ণ গাছ ও ডাল কেটে জীবন্ত গাছ গুলো রেখে মহাসড়ক ৬ লেনে বৃদ্ধি করা হোক।কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোরালো ভুমিকা না থাকার কারণে ব্যবসায়িরা সুযোগটি কাজে লাগিয়ে গাছের গুড়ি ফেলে রেখেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমিতে অবৈধভাবে কাঠ রেখে ব্যবসা করছে। সড়কের পাশে গাছ রাখার কারণে রাতে নেশা সেবন কারিরা কাঠের উপরে বসে বসে নেশা সেবন করে। সড়কের দু,পাশে ব্যবসা প্রতিষ্টান ও আবাসিক এলাকা। নেশার গন্ধে চলাচল করা লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠে।