যশোরের মণিরামপুরে চলছে রমরমা সুদের ব্যবসা। প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা সুদ দিতে হয় সাধারন মানুষের। মাস শেষে সুদের টাকা দিতে না পারলে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বৃদ্ধি পায়। পরে না দিতে পারলে মাঠের জমি, গরু এমনকি বসতভিটা লিখে দিতে হয় সুদ ব্যবসায়ীদের নামে। সুদ ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এরইমধ্যে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে অনেকেই। সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ এলাকার সাধারন মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। সুদের ব্যবসা কয়েক বছর ধরে চলছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে। সুদে কারবারীদের অত্যাচারে বাড়ি ছাড়া হাসাডাঙ্গা গ্রামের ভূক্তভোগী ওমর আলী গত শনিবার রাতে শ্যামকুড় ইউনিয়নের পাঁচ সুদে কারবারীর নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, শ্যামকুড় ইউনিয়নের ইমরান হোসেন, ইদ্রিস আলী, আসলাম মোড়ল, আনিচুর রহমান ও আবু দাউদ দফাদার এলাকার সুদে কারবারী। তাদের অত্যাচারে এলাকার মনিরুল, মোমিন, সিদ্দিক, ইকবালসহ অনেকেই আজ বাড়ি ছাড়া জীবন যাপন করছেন। এ ছাড়া হাসাডাঙ্গা গ্রামের অজিবর দফাদারের ছেলে ওমর আলী একই গ্রামের আসলাম মোড়লের কাছ থেকে কয়েকমাস আগে ৩৫ হাজার টাকার বিপরীতে ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করলেও তার সমুদয় টাকা পরিশোধ হয়নি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। সময়মত সুদের টাকা দিতে না পারলে পরিবারের লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হয়। সুদেকারবারীদের অত্যাচারে বাড়ি ছেড়ে অন্যাত্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে জানান ওমর আলী। সর্বশেষ উপায়ন্ত না পেয়ে ওমর আলী গত শনিবার রাতে মণিরামপুর থানায় অভিযোগ করেছেন।
অপর এক ভূক্তভোগী মনিরুল ইসলাম জানান, দক্ষিণ শ্যামকুড়ের ইমরানের কাছে ১০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম, বিপরীতে ৩৫ হাজার ফেরত দিয়েছি, তাতেও টাকা শোধ হয়নি টাকা। সুদে কারবারি অত্যাচারে এখন আমি এলাকা ছাড়া। শুধু আমি না, আমার পিতা আবদুল মোমিনও বাড়ি ছাড়াতে বাধ্য হয়েছে।
শুধু শ্যামকুড় ইউনিয়ন নয়, পৌর শহরের এক সুদে কারবারীর খপ্পড়ে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। দোকান ঘর এমনকি বাড়ি লিখে দিতে হয়েছে সুদে কারবারীর নামে। এ ছাড়া বেসরকারী এক স্কুল শিক্ষককে চাকুরি ছাড়তে বাধ্য করছেন সুদেকারবারী বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। মণিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। সত্যতা যাচাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।