বাগেরহাটের শরণখোলায় অফসিজনে তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন চাষীরা। ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় অসময় তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সফলতা দেখে অন্যান্য চাষীদের মধ্যে আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাদের খেত জুড়ে ঝুলছে চোঁখ জুড়ানো শত শত বাহারি রঙের তরমুজ। ইতোমধ্যে বাজারজাত করা শুরু হয়েছে। অসময়ে তরমুজের দাম ভালো থাকায় অধিক লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। শরণখোলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে তরমুজ চাষিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম মনি জানায় ক্লাইম স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অফসিজনে তরমুজ চাষের জন্যে ১০ টি প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। ওই সকল চাষীদের জৈব রাসায়নিক সার, মালচিং পেপার, হলুদ স্টিক ফাঁদ, সেক্স ফোরেমন ফাঁদ, জৈব বালাইনাশক এবং সুপার কিং, ইয়োলো কিং, কালাচাঁদ ও পাকিজা জাতের বীজ চাষীদের মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। ঐসকল চাষিরা ৩৩ শতক থেকে প্রায় ২ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছে।
উপজেলার রতিয়া রাজাপুর গ্রামের দরিদ্র সফল তরমুজ চাষী বিপুল মাঝি এ প্রতিনিধিকে জানায়, গত বছর ৩৩ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেন। সাথে মাৎস্য ঘেরের পাড়ে লাউ, মিষ্টিকুমড়া, সশাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করেন। আশানুরূপ সাফল্য লাভ দেখে চলতি মৌসুমে প্রায় দুই বিঘা জমিতে সুপার কিং ইয়েলো কিং ও কালাচাঁদ জাতের তরমুজ চাষ করেন। গাছে ফলন দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রায় সহশ্রাধিক তরমুজ ঝুলছে তার ক্ষেতে। কেবলমাত্র বাজারজাত করা শুরু করেছেন। দাম ভালো পাচ্ছেন বলে জানান। তার ক্ষেতের সব তরমুজ বিক্রি হলে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আয় হতে পারে। তিনি আরও জানান চাষের শুরু থেকেই কৃষি বিভিাগের প্রশিক্ষণ ছাড়াও বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। বিপুল মাঝির তরমুজ চাষ দেখে এলাকার কযেকজন চাষি এবার তরমুজ চাষ করেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, গোপালগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও পিরোজপুরের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিপুল মাঝিকে একটি এবং ক্লাইম স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় নয়টি প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে। প্রতি প্রদর্শণীতে গড়ে প্রায় পাঁচশত তরমুজের পলন হয়েছে যা আশানুরূপ। যার গড়ে ওজন ৩ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত। বর্তমানে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রয় হচ্ছে। আশানুরূপ ফলন হওয়ায় চাষিরা খুবই খুশি। তাদের বাড়িতে গিয়ে দেয়া হচ্ছে বিভন্ন পরামর্শ। তরমুজ চাষিদের প্রশিক্ষণসহ সব ধরণের সুযোগ সুবিধা দিয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে। চাষিরা অফসিজন তরমুজ চাষে এগিয়ে আসলে বেকারত্ব দুরসহ আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।