একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও শুধুমাত্র গেজেটে নাম না থাকায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ কেরামত আলী খানকে (৭০)। এ ঘটনায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও মৃতের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঘটনাটি জেলার বানারীপাড়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের। সুপ্রিম কোর্টের সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল আনিচুর রহমান জানিয়েছেন, তার শশুড় অবসরপ্রাপ্ত উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ কেরামত আলী খান দীর্ঘদিন থেকে ক্যান্সারে ভূগছিলেন। বুধবার ভোরে ঢাকার বনশ্রী এলাকার আল-রাজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন। ওইদিন বাদ আসর বানারীপাড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ মাঠে মরহুমের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। কেরামত আলী খানের বড় মেয়ে বানারীপাড়া উপজেলার পূর্ব সলিয়াবাকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কামরুন্নাহার রুবি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার বাবা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারাদিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেছিলেন। তিনি নিজের জীবনবাঁজি রেখে নয় মাস যুদ্ধ করেছেন। কামরুন্নাহার রুবি আরও বলেন, দেশ স্বাধীনের পর কর্মের সুবাধে দেশের বিভিন্ন এলাকায় থাকায় বাবা গেজেটভূক্ত হতে পারেননি। চাকরি থেকে অবসরগ্রহনের পর বাবা মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভূক্ত হতে যথাযথ নিয়মে আবেদন করেছেন। তাতেও আমাদের কোন ক্ষোভ নেই। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার জন্য দাবি জানানো হলেও শুধুমাত্র গেজেটে বাবার নাম অন্তর্ভূক্তি প্রক্রিয়াধীন থাকায় বাবাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়নি। ক্ষোভ প্রকাশ করে কামরুন্নাহার রুবি বলেন, হয়তো খুব শীঘ্রই বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে অন্তর্ভূক্তি হবে কিন্তু বাবাতো আর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পেলোনা। এ ব্যাপারে বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতিমা আজরিন তন্বী বলেন, যাদের কারণে দেশ স্বাধীন হওয়ায় আজ আমরা সরকারি কর্মকর্তা হয়েছি, সেই বীর সৈনিকদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে না পারা আমার জন্য বড় কস্টের। কিন্তু আইনের বিরুদ্ধে আমি তো কোন কাজ করতে পারছিনা। মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম গেজেটে অন্তর্ভূক্তি প্রক্রিয়াধীন থাকায় তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া যায়নি।