অনেকটা গোপনীয়তা রক্ষা করেই ২২ সেপ্টেম্বর রাতে ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চলছিল ১৬বছরের কিশোরী রাইসা আক্তারের বিয়ের প্রস্তুতি। কাজী, বর ও তার আত্মীয়-স্বজনরাও উপস্থিত মেয়ের বাড়িতে। চলতে থাকে সকল আয়োজন। কিন্তু এরইমধ্যে প্রশাসন বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে বিয়ে অনুষ্ঠানে অনাকাঙ্খিতভাবে হাজির হন ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম। পন্ড হয় এসএসসি পরিক্ষার্থীর বিয়ে। জরিমানা করা হয় ১০ হাজার টাকা। এ সময় ইউএনও’র উপস্থিতি টের পেয়েই যে যার মতো করে পালিয়ে যান মেয়ের বাবা, কাজী এবং বর ও তার আত্মীয়স্বজন সবাই। শেষে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার অপরাধে কিশোরীর মা মজিদা বেগমকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১০হাজার টাকা জরিমানা করে প- করা হয় বাল্যবিবাহটি। বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাধাল গ্রামে বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া কিশোরী রাইসা আক্তার ওই গ্রামের সোবাহন হাওলাদারের মেয়ে। সে স্থানীয় ডিএন কারিগরি কলেজের স্কুল শাখার এসএসসি পরীক্ষার্থী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভোলারপাড় গ্রামের মৃত নূর ইসলাম হাওলাদারের ছেলে কাওসার হাওলাদারের (২৫) সাথে বিয়ে ঠিক হয়। কাজী, বর এবং বরপক্ষের সবাই উপস্থিত হলে রাত ১১টার দিকে শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এমন সময় বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হন শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম। তার উপস্থিতি টের পেয়ে মেয়ের বাবা, কাজী, বর, বরের ভাই ও আত্মীয়রা পালিয়ে যান। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের মাধ্যমে বাল্যবিবাহের খবর জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দিই। পরে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে মেয়ের মাকে ১০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর আগেই মেয়ের বাবা, কাজীসহ বর ও বর পক্ষের সবাই পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। ইউএনও জাহিদুল ইসলাম জানান, বাল্যবিবাহ সমাজের একটি অভিশাপ। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে। শিগগিরই উপজেলার সকল কাজীদের ডেকে বাল্যবিবাহ রেজিস্ট্রি না করার জন্য শতর্ক করা হবে।