পাঠদানের সুযোগে শ্রেনীকক্ষের মধ্যে পঞ্চম শ্রেনীতে পড়-য়া এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ৩২ নং গোমানতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিষয়টির প্রতিকার দাবি করে ১২ সেপ্টেম্বর ভুক্তোভোগী ঐ ছাত্রীর পিতা শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক এসএম শাহাজাদা পুর্ববর্তী কর্মস্থলে একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন বলেও ওই অভিভাবক তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন।
উপজেলার গোমনতলী গ্রামের এসএম শহিদুল ইসলাম লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন গত ১০ সেপ্টেম্বর গণিত ক্লাসে শাহাজাদা স্যার তার শিশু কন্যার সাথে অশোভন ও কুরুচিকর আচারণ করেন। পাঠদানের সুযোগে কাছে ডেকে নিয়ে পঞ্চম শ্রেনীতে পড়-য়া ঐ শিশুর বুক ও শরীরের নিচের অংশে আপত্তিজনকভাবে চাপ দেয়। একপর্যায়ে বাড়িতে ফিরে কান্নাকাটি শুরু করে এবং পরবর্তীতে মায়ের কাছে ঘটনা খুলে বলে বিদ্যালয়ে যেতে সে অনীহা প্রকাশ করে। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিকার দাবি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুর্ববর্তী কর্মস্থল ৫০ নং গাবুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই শিক্ষক একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন বলেও লিখিত অভিযোগে দাবি করেন শহিদুল ইসলাম।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষক এসএম শাহাজাদা জানান এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয়দের সাথে বিরোধ থাকায় তার সম্মানহানীর জন্য একটি পক্ষ অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এমন ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ হলে তার চাকুরী না থাকার পাশাপাশি শিশুটিকে আজীবন কলঙ্ক বয়ে বেড়াতে হবে। তিনি দাবি করেন ওই অভিভাবক সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যেয়ে অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতিসহ সকলকে আশ^স্থ করেছেন।
যদিও অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়ে নিশ্চিত হতে বার বার চেষ্টা করে শহিদুল ইসলাম ও তার পরিবারের ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল নম্বর বন্ধ যাওয়া যায়। তবে একাধিকসুত্র জানায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে ঐ শিক্ষকের সাথে ভুক্তেভোগী ছাত্রীর পরিবারের সাথে মোটা অংকের টাকায় আপোষরফা হয়েছে বলে তারা কারও সাথে যোগাযোগ করছে না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ গিয়াসউদ্দীন জানান বিষয়টি লোকমুখে শুনলেও তার কাছে ভুক্তোভোগী ছাত্রীর পরিবারের কেউ অভিযোগ করেনি। বিদ্যালয়ের সভাপতি বা শিক্ষা অফিসারের পক্ষ থেকেও তাকে কিছু জানানো হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ফাহিম হোসেন জানান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে তারা অবগত। তবে বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতি বিষয়টি দেখছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতি এসএম জয়নাল হোসেন জানায় তিনি বিষয়টি নিরসনের কোন দায়িত্ব শিক্ষা অফিসারের থেকে নেয়নি। এসএমসি সভাপতি বরাবর ক্ষুব্ধ অভিভাবকের লিখিত অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার শিক্ষকদের উপস্থিতিতে দু’পক্ষকে নিয়ে বসেছিলেন। তবে কোন সিদ্ধান্তে আসা যায়নি উল্লেখ করে তিনি উভয় পক্ষের মধ্যে মিমাংসা করিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেন।