নীলফামারীর জলঢাকায় দেড় বছরে ৪৮টি গরু চুরি গেছে। অপরাধী সংঘবদ্ধ চোর চক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জলঢাকা থানা পুলিশ।
বুধবার ২৭ সেপ্টেম্বর জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেন জেলা পুলিশ সুপার মোঃ গোলাম সবুর পিপিএম সেবা।
এ সময় পুলিশ সুপার মোঃ গোলাম সবুর পিপিএম সেবা বলেন,গত ২১ সেপ্টেম্বর জলঢাকা থানার বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালনগ্রাম বটতলী এলাকার কমলকান্তী রায় এর ৬ টি গরু চুরি যায়। এরই প্রেক্ষিতে জলঢাকা থানার মামলা একটি মামলা হয়।
মামলা হওয়ার পর থেকেই জলঢাকা থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ৪৮ ঘন্টায় টানা অভিযান পরিচালনা করে গরু চোর চক্রের কুখ্যাত চোর মোঃ তরিকুল ইসলাম (২৩), মোঃ ছাদেকুল ইসলাম (২৩), মোঃ উমর ফারুক (২৫), আবদুর রাজ্জাক (২৫), শ্রী শংকর চন্দ্র রায় (১৯), সকলের থানা জলঢাকা, জেলা-নীলফামারীগণকে জলঢাকা থানার বিভিন্ন এলাকা অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তারা বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করে। আসামি তরিকুল, শংকর এবং ছাদেকুল জানায় যে, তারা প্রথমে জলঢাকা থানা এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির সুপারি বাগান থেকে সুপারি চুরি করে জলঢাকা বাজারে এক ব্যক্তির দোকানে বিক্রি করতো। ওই বাজারে তাদের সাথে আসামি উমর ফারুক এবং রাজ্জাকের পরিচয় হয়। পরে তারা একত্র হয়ে জলঢাকা থানার বিভিন্ন এলাকা হতে দিনের বেলা ছাগল চুরি করে আসামি তরিকুলের ভ্যানে করে বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করতো। এভাবে তারা প্রায় ৪০/৫০ টি ছাগল চুরি করে। ধীরে ধীরে তাদের সাথে আরো কিছু চোরের পরিচয় হয় এবং তারা গরু চুরি করার পরিকল্পনা করে। আসামি শংকর এর মামার বাড়ী বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালনগ্রাম এলাকায় হওয়ায় সে সহযোগী আসামি ছাদেকুলসহ ভ্যানে করে তার মামার বাড়ী থেকে আশপাশ এলাকায় কোন বাড়ীতে গরু আছে এটির সন্ধান করতো। সহযোগী অন্যান্য আসামি সহ সেই বাড়ী গুলোতে গরু চুরির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মাফিক তারা গত দেড় বছরে সাইডনালা, শালনগ্রাম, বারোগোপাল এলাকায় মোট ৪৮টি গরু চুরি করে। আসামি তরিকুল, শংকর, ছাদেকুল, রাজ্জাক জানায় তাদের আরো কয়েকজন সহযোগীসহ তারা বিভিন্ন বাড়ী থেকে গরু চুরি করে নির্জন স্থানে অপেক্ষা করতো। আসামি তরিকুল মোবাইল ফোনে আসামি উমর ফারুককে কল দিয়ে ডাকলে উমর ফারুক মিনি ট্রাক নিয়া কাছাকাছি রাস্তায় আসা মাত্রই তারা সকলে মিলে চোরাই গরু গুলো ট্রাকে তুলে দিতো। এভাবে তারা বিভিন্ন রোড দিয়ে চোরাই গরু দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছিল। আসামীদের দেয়া তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাই পূর্বক গরু ও গরু পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক উদ্ধারসহ অন্যান্য আসামীদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তার অব্যহত আছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোঃ আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এ- অবস্) মোঃ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নীলফামারী-জলঢাকা সার্কেল মোঃ মোস্তফা মঞ্জুর পিপিএম সেবা, ডিআইও ওয়ান (ভারপ্রাপ্ত) আকরাম আলী, জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুক্তারুল আলম, জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আল-আমিনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রোনিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা।