শহর সুনামগঞ্জ পরিকল্পিত উন্নয়ন প্রত্যাশায় নাগরিক সংলাপ শিরোনামে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি'র আয়োজনে শনিবার লাইব্রেরি'র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংলাপটি সকাল ১১ টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত চলে।
সংলাপে শহরের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করা হয়। এবং সমস্যা সমাধানে করণীয় নির্ধারণ করা হয়।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির সভাপতি ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং লাইব্রেরি'র সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খলিল রহমানের সঞ্চালনায় সংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত।
নগর পরিকল্পনার এই আয়োজনেউন্মুক্ত আলেচনায় অংশ নেন, সাবেক অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দে, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আলী আমজদ, হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, সহসভাপতি অধ্যাপক (অবঃ) চিত্তরঞ্জন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক সুন্মাকণ্ঠের সম্পাদক বিজন সেন রায়, যুগ্ম সম্পাদক সালেহীন চৌদুরী শুভ, নারী নেত্রী গৌরী ভট্টাচার্য্য, দৈনিক সুনামগঞ্জের খবর সম্পাদক সাংবাদিক পঙ্কজ কান্তি দে, অ্যাডভোকেট এনাম আহমেদ, অ্যাডভোকেট মাহবুবুল হাসান শাহীন, জেলা সুজনের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফজলুল করিম সাঈদ, উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, শিক্ষক অনুপ তালুকদার, সাবেক পৌর কমিশনার আব্দুল্লাহ আল নোমান, ব্যাংকার মো. গোলাম আজাদ, আলী আশরাফ লিটন, সাংবাদিক হিমাদ্রি শেখরসহ প্রমুখ।
সংলাপে বক্তারা শহরের কামারখাল উদ্ধারের জন্য সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানান। তারা একে একে পৌর শহরের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেণ এবং সমাধানে করণীয় র্নিধারণ করেন। বক্তব্যে ঘুরে ফিরে আসে শহরের সুন্দর্য্য বর্ধনের বিষয়। প্রায় সকল বক্তাই শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে সকল ধরণের পরিবহন অন্যত্র সরানোর দাবি জানান এবং আলফাত স্কয়ার এর আশে পাশ থেকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ও রাস্তার পাশ থেকে ময়লা সরিয়ে এ এলাকাকে দৃষ্টিনন্দন করার দাবি তুলেন। বক্তারা পৌর শহরের জলাবদ্ধতা, ড্রেইন ব্যবস্থা, শিশু এবং বয়স্কদের বিনোদনের ব্যবস্থা, মাদক, শহরের গুরুত্বপূর্ণ ৫ টি খাল উদ্ধার সহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। বক্তারা দাবি করেন কামাল খালের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের কালবার্ড থেকে কালিবাড়ী পর্যন্ত ওয়াকওয়ে নির্মান করার জন্য। এটা বাস্থবায়নে প্রয়োজনে আমরা আর্থিক সহযোগিতা দেব।
সুনামগঞ্জ পৌর সভার মেয়র নাদের বখত বলেন, ' শহর পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে আমরা চেষ্টা করছি কিন্তু নাগরিকদেরকেও এই ব্যাপারে আরো সচেতন হতে হবে। শহরকে উন্নয়ন করার জন্য আমাদের সক্ষমতা আছে পৌর কর বৃদ্ধি পেয়েছে। সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যেতে চাই”। তিনি বলেন, আমরা রাস্তার পাশে পৌল সভার জায়গা উদ্ধার করছি কিন্তু একটি মসজিদ এবং একটি দুর্গাবাড়ি নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। দুর্গাবাড়িকে আমি জায়গা কিনে দিয়ে ছিলাম আমোদের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য কিন্তু তারা সে কথা রাখেন নি। পৌল সভার এখন সামর্থ আছে প্রয়োজনে মসজিদ অন্যত্র তৈরী করে দিতে। আপনারা সবাই সহযোগিতা করলে আমাদের সে কাজটা সহজ হবে। আপনাদের সকল কথা আমরা নোট নিচ্ছি। আশা করি আমাদের সমামর্থ অনুযায়ী সে সব কাজ করতে পারবো।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, 'সরকারের উন্নয়ন সক্ষমতা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি। শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে নাগরিকদেরকে কাজ করতে হবে। আপনাদের সবার দাবি পুরাতন বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তর আমি এ বিষয়ে কাজ করছি আপনারা যেনে আনন্দিত হবেন নতুন বাসস্ট্যান্ডের পাশে যে পুকুরটি ছিল তা বরাট প্রায় শেষের দিকে। আশা করছি আগামী জানুয়ারী মাসের মধ্যেই পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে সকল যানবাহন নতুন বাসস্ট্যান্ডে স্থানান্তর করা হবে।
কামারখাল বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা উচ্ছেদ প্রায় শেষ করেছি। কিন্তু এখনও সুরমা নদীর সাথে কামারখালের সংযোগ সৃষ্টি করিনি। এ বিষয়ে আপনাদের পরামর্শের প্রয়োজেন আছে। খাল এবং নদীর সংযোগ হলে কি কি সমস্যা হতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।