রাজশাহীর তানোরে এক আদবাসী শিশু ধর্ষণের বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধন থেকে ধর্ষক মনিরুল ইসলাম জনিকে (৩২) অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। আজ (২ অক্টোবর) সোমবার দুপুরে থানা মোড়ে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, পারগানা পরিষদ ও উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের আয়োজনে ঘন্টাব্যাপি এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
এরআগে তানোর ডাকবাংলো থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা। পরে থানামোড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে মিলিত হয়। এতে পারগানা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মি: রমেশ মুরমুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুসোন্না, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়াড়, উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি হিংগু মুরমু, সাধারণ সম্পাদক হিমু মুরমু ও পারগানা পরিষদের কলমা ইউপির সভাপতি পিলিপ হেমরম।
এছাড়াও উপজেলার তালন্দ ইউনিয়ন সভাপতি জেঠা টুডু, ভিকটিমের পিতা, উত্তরবঙ্গ শিশু উন্নয়ন প্রকল্পের ম্যানেজার গণেশ মার্ডি, ভাষা গবেষক অভিলাশ বিশ্বাস, রুলফাও এনজিওর তানোর আঞ্চলিক সুপার ভাইজার শুম্ভনাথ দাস, সিনিয়র ওয়ার্কার আবদুর রহমান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ নেতা ছোটন সরদার ও মহিলা সদস্য শেফালী হেমরম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে ধর্ষক জনিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। অন্যথায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে তানোর অচল করে দেবার হুমকী দেন আদিবাসী নেতারা।
এসময় বক্তারা বলেন, মামলা তুলে নিতে ভিকটিম ও তার পরিবারকে নানা ভাবে হুমকি প্রদর্শন করছেন ধর্ষকের পরিবার। ধর্ষণের সহযোগী আলীকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও মুলহোতা ধর্ষক জনিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করতে না পারলে আমাদের আন্দোলন জোরতাল ভাবে চলবে বলেও হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
প্রসঙ্গ, রাজশাহীর তানোরে ১০ বছরের ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে খাড়ির ধারে ঘাস কাটতে মাঠে যায় ৫ম শ্রেণির এক আদিবাসি ছাত্রী। এ সময় ভাইকে বেঁধে রেখে বোনকে ধর্ষণ করে উপজেলার কলমা ইউপির শালবাড়ী গ্রামের মোঃ জনি (২২) ও একই গ্রামের মোহাম্মদ আলী (২০)। এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদি হয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার দিবাগত গভীর রাতে জনি ও আলীকে আসামি করে তানোর থানায় একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই ভিকটিম আদিবাসী ছাত্রীকে উদ্ধার করে ডাক্তার পরিক্ষার জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর রোববার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রেরণ করে। ঘটনার ৪দিন পর সহযোগী আলীকে ঢাকা থেকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু রহস্যজনক কারণে জনিকে আটক করা হয়নি। এ সময় আদিবাসী সম্প্রদায়ের জনসাধারণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার বিপুল সংখ্যক নেতা ছাড়াও লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
এব্যাপারে তানোর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুর রহিম বলেন, আদিবাসী ছাত্রী ধর্ষণ ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধান আসামি জনিকে গ্রেপ্তারে জোর অভিযান চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকেও গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান ওসি।