রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. দুলাল আলম সাংবাদিকদের উন্নয়ন কর্মকান্ডের তথ্য দিতে নারাজ। গত ঈদ-উল-আযহার পর অফিস সমূহের প্রথম কার্যদিবসের দিন থেকে এই প্রতিবেদক উপজেলার শিক্ষার উন্নয়ন, কতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন বিল্ডিং নির্মাণ ও সংস্কার হয়েছে তার পরিমাণ ও টাকার পরিমাণ।
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তার শিক্ষার্থীদের উপ-বৃত্তি প্রদান সংখ্যা ও টাকার পরিমাণ, এনটিআরসির সুপারিশ প্রাপ্ত কতজন শিক্ষক এই উপজেলায় কতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত হয়ে চাকরী করে বেতনভাতা ভোগ করছেন তার সংখ্যা, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত সংখ্যাসহ বিভিন্ন তথ্য চেয়ে আসছে। কিন্তু তথ্য দিবো বলে নানান ভাবে গড়িমসি এখন পর্যন্ত সময় কালেক্ষেপণ করে আসছেন।
এর মাঝেও অন্তত ৫ থেকে ৬ বার মুঠোফোনে ও সরাসরি তথ্য গুলো পাওয়ার জন্য তাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। পুনরায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সময় চেয়ে বলে তথ্যগুলো দিবো। আপনাকে দেবো নাতো কাকে দেবো আপনি তো ভালো মানুষ।
সর্বশেষ গত ২৭ সেপ্টেম্বর এই প্রতিবেদক তার অফিসে তথ্য নেবার জন্য গেলে কোন কথা বলা ছাড়াই তার অফিসের এক কর্মচারিকে ডেকে তথ্য নিয়ে আসতে বলে। দুই পৃষ্ঠার তথ্য ওই কর্মচারী প্রস্তত করে আনলেও একটি পৃষ্ঠা রেখে দিয়ে তথ্যর কপিটা এই প্রতিবেদকের কাছে এগিয়ে দেয়। তাতে দেখা যায়, দীর্ঘদিন থেকে যেসব তথ্যর বিস্তারিত চাওয়া হয়েছিলো সেইসব তথ্য পুােরাপুরি না দিয়ে নামমাত্র তথ্য সরবারাহ করে যাতে কোন বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ নেই ও সংবাদ তেরী করার মত তথ্যও ছিলো না।
পরে এই প্রতিবেদক তাকে বলে যা চাওয়া হয়েছিলো তা দেননি তো। আপনাকে কি আমি এতোদিন থেকে বুঝাতে পারিনি কি তথ্য চেয়ে আসছি। এই সময় তাকে মাথা নিচু করে চুপচাপ থাকতে দেখা যায়। প্রয়োজনীয় তথ্য না পাওয়ায় এই প্রতিবেদক তার অফিস কক্ষ থেকে বের হয়ে চলে আসে।
পরে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলমকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দুলাল আলমের কর্মকান্ডর বিষয়ে অবগত করলে চেয়ারম্যান শিক্ষা অফিসারকে ফোনটি ধরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করে। তাকে ফোনটি দেওয়া হলে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে মূল বিষয় ছেড়ে দিয়ে মিথ্যাচার করতে থাকে। এই প্রতিবেদক সাথে সাথে মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করলে শিক্ষা অফিসার নিশ্চুপ থাকে।
এই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণ। নিয়মিত ও সময় মত অফিস না করা, বিভিন্ন জাতীয় দিবসে উপজেলা প্রশাসনে উপস্থিত না হয়ে রাজশাহীতেই থাকাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এই বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কি তথ্য চেয়েছেন সেগুলো আপনি আমাকে দেন তারপর আমি তার সাথে কথা বলে দেখেছি। এছাড়াও তিনি তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করার পরামর্শ দেন।
এবিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন, আসলে সরকারের উন্নয়নের অভাব নেই। প্রধানমন্ত্রী অনেক উন্নয়ন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের উন্নয়নের তথ্য দিতে বাঁধা কোথায় সেটি বুঝছি না। তিনি চাইলে এসব তথ্য দিতে পারেন। তবে আমি তার সাথে কথা বলে দেখবো বলে জানান।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিমুল হক নাসিম বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের যে সাফল্য তাতে প্রত্যেকের উচিত তা তুলে ধরা। শিক্ষা অফিসার এসব তথ্য কেনো দিতে চাইছেন না কেনা তা ভেবে দেখা উচিত। তার এমন কান্ড সরকারকে অসহযোগিতার মনোভাব দেখায় বলে মনে করি।