ছিনতাইকারীর হামলায় আহত হয়ে ১৭দিন অচেতন অবস্থায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রাজশাহী কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নিশাদ আকরামের (২৪) মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ভোর ৫টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি ইন্তেকাল করেন। এর আগে ছিনতাইকারীর হামলায় আহত হয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। মৃত নিশাদ আকরামের বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার আড্ডা গ্রামে।
এ ঘটনায় নিশাদের চাচাতো ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সেই মামলায় জড়িত সন্দেহে সেলিম হোসেন নামের এক চিহ্নিত ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছেন।
এ ঘটনায় নিশাদের বন্ধু খালিদ হোসেন জানান, নিশাদ তাদের এক অসুস্থ বান্ধবীকে হাসপাতালে রেখে আরেক বান্ধবীকে নিয়ে রিকশায় করে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে নগরীর রাজারহাতা এলাকা পার হওয়ার সময় রাজশাহী বহুমুখী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় সড়কের দিক থেকে হেঁটে আসা অজ্ঞাত কয়েকজন যুবক রিকশার গতিরোধ করার চেষ্টা করে। সে সময় বাধা দিতে গেলে তারা নিশাদকে ধাক্কা দিয়ে রিকশা থেকে ফেলে দেয়। আর প্রাণ ভয়ে রিকশা নিয়ে চালক দ্রুত পালিয়ে যায়। ওই সময় নিশাদের সাথে থাকা ওই বান্ধবী চিৎকার করলে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা লোকজনের সহযোগিতায় আহত নিশাদকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর তখনও নিশাদ অচেতন ছিলো। সঙ্গে থাকা ওই বান্ধবীর বরাদ দিয়ে খালিদ আরও বলেন, হামলাকারী যুবকরা নিশাদের মানিব্যাগ ও মুঠোফোন নিয়ে যায়। তবে হাত ঘড়ি কিছু দুরে পড়ে ছিল। হামলাকারী একজনের হাতে ধারালো অস্ত্রও ছিল।
মৃত্যুর ঘটনায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ভর্তির পর থেকেই নিশাদের চেতনা ফেরেনি। তার মাথার হাড় ভেঙে যাওয়ায় মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিল। সে কারণে নিশাদকে বাচানো যায়নি।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সেলিম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নামে সাত-আটটি মামলাও আছে। সেলিম একজন পেশাদার ছিনতাইকারী। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।