ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার হাট বাজার গুলোতে পাটের দাম কম হওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছ। উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে প্রতিমন পাট ১৫শ থেকে ১৮শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে সোনালী আঁশকে ঘিরে কৃষকের ঘুরে দাঁড়ানোর সোনালী স্বপ্ন ফিকে হচ্ছে। উপজেলার পাট চাষিরা বলেন এবার চলতি মৌসুমের প্রথম দিকে হাট বাজারে পাটের দাম ভালো থাকায় লাভের আশা ছিল কৃষকের।কিন্তু হঠাৎ করে পাটের দাম বাজার কমতে শুরু করায় কৃষক দিশেহারা হয়ে গেছে। বর্তমানে হাট বাজারে প্রতি মণ পাট ১৫শ থেকে ১৮শটাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা দুই মাস আগে বিক্রি হয়েছিল ২হাজার থেকে ২৫শ টাকা দরে। যার ফলে সোনালী আঁশে লাভের আশা ফিকে হয়ে যাচ্ছে দরপতনে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ বাড়ায় ও পাটকলগুলো পাট না কেনায় দাম কমে আমাদের পাট কিনতে হচ্ছে। এদিকে পাটের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। শৈলকুপা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৮হাজার ৪শ ২৫ হেঃ জমিতে পাট চাষ হয়েছে।যা গত বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলায় বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষমাত্রা১৯ হাজার ৩শ ৭৮মেঃটন। সরেজমিনে উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ বাজার, খুলুমবাড়িয়া, শেখপাড়া, গাড়াগন্জ, ভাটই, হাটফাজিলপুর, শিতালী ধাওড়া, কচুয়া বাজারসহ শৈলকূপা হাটে পাটের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিমণ পাট ১৫শ থেকে ১৮শ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে। উপজেলার কাশিনাথপুর গ্রামের গ্রামের প্রান্তিক কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি ১শ শতাংশ জমিতে পাট চাষ করেছেন। তাতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। পাট পেয়েছেন ১৮ মণ। লাঙ্গল বাঁধ বাজারে তিনি প্রতিমন পাট ১৭শ টাকা দরে বিক্রি করেছন। তিনি সরকারের কাছে ধান-চালের ন্যায় পাটের দামও নির্ধারণ করে দেয়ার দাবী জানান। উপজেলার ধলহরা গ্রামের পাট চাষী শফি মিয়া বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর রাসায়নিক সার, কীটনাশকের দাম ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় পাট চাষের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। বর্তমান বাজার মূল্যে পাট বিক্রি করলে লাভ হয় না। এতে পাট চাষে আগ্রাহ হারাবে কৃষক। কুশবাড়িয়া গ্রামের আতিয়ার রহমান হাটফাজিলপুর গ্রামের বকুল বিশ্বাস, তারা জানান পাটে খরচের টাকাও উঠছেনা তাই আগামী বছর থেকে পাটের চাষ আর করবনা। এখন জমি বন্ধুক রেখে দিনমজুরের টাকা দিতে হচ্ছে। রতিডাঙ্গা গ্রামের বাদশা মোল্লা জানান বাজারে ১মন পাট বিক্রি ১ কেজি ওজনের একটা ইলিশ মাছ তাও হতে চায়না। বর্তমানে পাট হয়েগেছে কৃষকের গলার ফাঁশ। বাজার পাট ব্যবসায়ী হারাধন কুন্ডু বলেন, সরকারি পাটক্রয় কেন্দ্র না থাকায়, পাট রপ্তানিকারক ও বেসরকারি পাটকলগুলো পর্যাপ্ত পাট না কেনায় পাটের বাজার অস্থিতিশীল। এ ক্ষেত্রে পুনরায় সরকারি পাটক্রয় কেন্দ্র চালু করে, সরকার পাটক্রয়ে ভূমিকা নিলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশাব্যক্ত করেন তিনি। এ ব্যাপারে শৈলকূপা উপজেলা কৃষি অফিসার আবুল হাসনাত জানান, পাটে যে পরিমান খরচ হয় কৃষকের তাতে বাজারে পাটের দাম আরো বেশি হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি।