উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি দুপুর পর্যন্ত বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চলগুলোর ঘর-বাড়ি ও ফসলী জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি প্রবল স্রোতে প্রবাহিত হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে নদীর দুই পাড়ের মানুষ। অন্যদিকে ৩দিন থেকে জেলা জুড়ে থেমে থেমে হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টির কারণে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্যাহ আল মামুন জানান, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং হ্রদে পানির পরিমাণ অনেক বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানকার বাঁধটি খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে ভারতীয় অংশে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে এবং কুড়িগ্রাম জেলায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার। তিস্তার পানি আরও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে তারপর কমার সম্ভাবনা রয়েছে। সে হিসেবে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যেতে পারে। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা মানুষকে সচেতন করছি। কোথাও কোনো সমস্যা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড তা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় কুড়িগ্রামে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বৃষ্টিপাত থেমে থেমে অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে এবং আগামীকাল শুক্রবার বৃষ্টিপাত কমে স্বাভাবিক হতে পারে। অন্যদিকে গতকাল ৪ অক্টোবর স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিস্তার দুই পাড়ের মানুষকে সরিয়ে নিতে মাাইকিং করা হয়েছিল। কিন্তু মানুষজন সরে না গিয়ে তাদের ঘর-বাড়ি এখনও অবস্থান করছেন। শুধু চরাঞ্চলের কিছু পরিবার আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। তিস্তা নদীর অববাহিকার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার চরের আবদুল বাতেন বলেন, গতকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুনেছি বড় বন্যা হবে,এই চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারি নি আমরা। স্থানীয় প্রশাসন গতকাল এসে সাবধানে থাকতে মাইকিং করে গেছে। তিস্তা নদীর অববাহিকার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মামুনুর রশীদ বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আমার এলাকার কিছু বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে। তবে এখন পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী রায় বলেন, তিস্তায় আকস্মিক বন্যার আশংকায় নদী অববাহিকায় মাইকিং করে সবাইকে নিরাপদে থাকার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা সজাগ রয়েছেন। ১৪টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে সম্ভাব্য বন্যা মোকাবেলা করার জন্য।