রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ায় পণ্য রপ্তানি কমেছে এবং হ্রাস পেয়েছে সেবা রপ্তানি। অথচ গড় আমদানি বেড়েছে অনেক বেশি। পাশাপাশি কমেছে বৈদেশিক বিনিয়োগ। কয়েক বছর ধরে সেবা রপ্তানি ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সেবা রপ্তানি ১৬ শতাংশের মতো কমেছে। রপ্তানি নেমে এসেছে সাড়ে ৭০০ কোটি ডলারের নিচে। এবং গত অর্থবছরও লক্ষ্যমাত্রা থেকে আয় কম হয়েছে ১৭ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য উঠে আসে। সম্ভাবনার তুলনায় দেশ থেকে সেবা রপ্তানি অনেক কম। আশানুরূপ অগ্রগতি নেই। বরং দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। কোনো অর্থবছরেই সেবা রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। মূলত সেবা নিম্নমান ও সহায়ক নীতি-কাঠামোর অভাবে দেশ সেবা রপ্তানিতে ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছে। তবে সহায়ক নীতি-কাঠামো এবং সেবার মান উন্নত হলে সেবা খাতের রপ্তানি কয়েকগুণ বাড়ানো সম্ভব হতে পারে। তবে সেবা রপ্তানি বাড়াতে বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোকে ব্যবহার করা, সেবার মান উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা ও অবকাঠামোর মতো বিষয়ে মনোযোগ দেয়াও জরুরি। কেননা অভ্যন্তরীণ সেবা খাত দাঁড়িয়ে গেলে রপ্তানির পাশাপাশি আমদানিও কমে আসবে। কারণ দেশের চিকিৎসাসেবা উন্নত হলে এ দেশে সেবা নিতে বিদেশিরা আসতো। এতে সেবা রপ্তানি বাড়তো। এখন তার উল্টো হচ্ছে। বর্তমান যুগে এসেও চিকিৎসাসেবা নিতে দেশের মানুষকে বিদেশে যেতে হচ্ছে। আর তাতে সেবা রপ্তানির পরিবর্তে আমদানি করা হচ্ছে। ফলে সেবা রপ্তানিতে ব্যবসায়িক স্বার্থে বেসরকারি খাতকেই এগিয়ে আসতে হবে। সেবা রপ্তানিতে পিছিয়ে থাকার প্রধান কারণ নিম্নমান ও যথেষ্ট মনোযোগের অভাব। সেবার মান বিশ্বমানের না হওয়ায় রপ্তানি সে হারে বাড়ছে না। তবে মান বাড়াতে সরকারকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে। সঠিক নীতিমালা, সেবার মান উন্নয়ন, রপ্তানির সরবরাহ চেইনে সম্ভাবনাময় পণ্যকে যুক্ত করা হলে সেবা রপ্তানি অনেক বাড়ানোর সুযোগ আছে এবং সেবা রপ্তানি বাড়ানোর মাধ্যমে আয় বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জাতীয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে।