মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনী গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ চারজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় এ হামলা বলে জানিয়েছে আহতরা। আহতরা হলেন, দেলোয়ার হোসেন(৬০), মোতালেব হোসেন(৫০), আবদুল কাদির (৬০) ও সাদিয়া আক্তার (২২)। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সানি আহমেদ বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহর সমর্থক ছিলেন তারা। নির্বাচনে জিন্নাহ পরাজিত হওয়ার পর থেকে প্রতিপক্ষের হামলা মামলার ভয়ে তারা বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছিলেন না। সাম্প্রতি তার চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সাদিয়া আক্তার বাবার বাড়ি ষোলআনী গ্রামে বেড়াতে আসেন। শুক্রবার ( ৬ অক্টোবর) বিকালে তিনি তার স্ত্রীকে ঢাকা নিয়ে যেতে গ্রামে আসলে বর্তমান চেয়ারম্যান হাফিজ্জুজামান খাঁন জিতুর সমর্থক জুয়েল তার ৫/৬ জন সহযোগী নিয়ে তাকে এলাকা ছেড়ে ঢাকা চলে যাওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে জুয়েল ও তার লোকজন তাকে মারধর শুরু করে। এ সময় তার বাবা দেলোয়ার হোসেন, চাচা মোতালেব হোসেন এবং শশুর আবদুল কাদির এগিয়ে আসলে তাদেরকে মারধর এবং কুপিয়ে জখম করে জুয়েল ও তার লোকজন। তাদের বাঁচাতে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সাদিয়া আক্তার এগিয়ে আসলে তাকেও লাথি দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। পরে স্থানীয় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কামরুন্নাহার বলেন, বিকেল পাঁচটার দিকে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীর সহ চারজন রোগী আমাদের আসেন। আহতদের মধ্যে দেলোয়ার হোসেন ও মোতালেব হোসেনের গায়ে ছুরি জাতীয় অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তাদের গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি দেওয়া হয়েছে। আবদুল কাদিরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে আর অন্তঃসত্ত্বা সাদিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ বলেন, সানির পরিবার রাজনৈতিক কারণে হামলা শিকার হয়েছে। শুধু তারা নয় তার নির্বাচন করায় বর্তমান চেয়ারম্যান জিতুর সমর্থকদের হামলা মামলার ভয়ে অন্তত ২২টি পরিবার এলাকা ছাড়া। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন। এদিকে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত জুয়েলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কাউকে হামলা করিনি। এ ধরনের কোন ঘটনা আমার জানা নেই যদি কেউ এসব বলে থাকে তাহলে তারা মিথ্যা বলছে। বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা সোহেব আলী বলেন, স্থানীদের মাধ্যমে বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি তবে এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।