পটুয়াখালীর বাউফলে আইন পরিবর্তন করে বি এন পি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার পক্ষে স্টাটাস দেয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার এবার স্টাটাস দিলেন স্থানীয় সাংসদের বিরুদ্ধে। বার বার এমন স্টাটাস দিয়ে দলের অপুরনীয় ক্ষতির অভিযোগ এনে দলীয় পদ থেকে তাকে বহিস্কারের দাবী করেন দলীয় নেতা কর্মীরা।
তিনি ৩০ সেপ্টেম্ভের রাতে তার নিজস্ব ফেসবুক ওয়ালে লিখেন “ রাজনৈতিক কারণে আইন পরিবর্তন করে হলেও বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দেয়া হউক”। এ স্টাটাস দিয়ে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রোসানলে পরেন এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় বিষয়টি প্রকাশ হলে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক ভিপি আবদুল মান্নান ০৩ অক্টোবর স্বাক্ষরিত পত্রে তিনদিনের মধ্যে জবাবের সময় বেধে দিয়ে এক শোকজ নোটিশ করেন। নোটিশে এর আগে একাধিক অবান্তর তথ্য প্রচার ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ থেকে বিরত থাকার জন্য তাকে দেয়া গত ২৫ অক্টোবর ২০২১ সালের কারণ দর্শানো নোটিশে কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শতর্ক নোটিশ প্রাপ্তির পরেও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কর্মকা- থেকে বিরত না থাকিয়া দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাঝে লিপ্ত থাকায় তাকে ১৯ মে ২০২২ তারিখ কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছিল।
তিনি (২অক্টোবর) সোমবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে তার ফেসবুক আইডিতে ৩০সেপ্টেম্ভরের ভাইরাল স্টাটাসের ব্যখ্যা দিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করে একটি স্টাটাস দিয়ে আবারো তিনি নেতা কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন।এমন স্টাটাস দেয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বার বার এহেন কর্মকান্ডের জন্য তার বহিস্কার দাবী করেন দলীয় নেতা কর্মীরা। এ ঘটনায় বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারেফ হোসেন খান এমন স্টাটাসকে পাগলের প্রলাপ আখ্যা দিয়ে বলেন “ তিনি ( মোতালেব হাওলাদার) দীর্ঘ দু বছরের বেশী সময়কাল ধরে দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। নেতা কর্মী ও জন শুন্য হয়ে তিনি বাউফলের দীর্ঘ দিনের অবিভাবক, কর্মী বান্ধব জনপ্রিয় জননেতা আ.স. ম ফিরোজ এমপি‘র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি বিএনপি জামাতের সাথে আঁতাত করে পুর্বাপর অনেক স্টাটাস দিয়ে দলের ক্ষতি করে চলছেন। তিনি মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কে আইন পরিবর্তন করে একজন অপরাধীকে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ করে দেয়ার কথা বলতে পারেন না।তিনি এমন স্টাটাস দেয়ার পর বিভিন্ন মিডিয়ায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্টাটাসটি সঠিক এবং তিনি এ বিষয়ে আপস না করার মত বক্তব্য দৃষ্টতার শামিল। এমন দৃষ্টতা দেখানোর পিছনে আমি মনে করি তার কোন অসৎ উদ্ধেশ্য থাকতে পারে। এমন ঘটনায় ফেসে গিয়ে নিজের এমন গুরুতর অপরাধ ঢাকতে, তিনি যে ঘটনার কোন সত্যতা নেই এমন মনগড়া ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে স্থানীয় সাংসদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পুর্নরুপে ভিত্তিহীন, অসত্য ও উদ্ভট চিন্তার ফসল। দলের বিরুদ্ধে কৌশলগত ষড়যন্ত্র। এমন স্টাটাস দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল এবং এ দায় তিনি এড়াতে পারেন না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাচ্ছি”।
বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শামসুল আলম মিয়া বলেন “ শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত নিজের অপরাধ আড়াল করতে মিথ্যাচার করে একজন সাংসদের বিরুদ্ধে বিষেধাগার করে কাকে খুশি করতে চেয়েছেন তা তিনি জানেন। তার এহেন কর্মকা- দলকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা দাবী করছি”। বাউফল উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য শাহজাহান সিরাজ বলেন “বার বার তিনি মিথ্যাচার করে দল ও দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে দলকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে, আমি তাকে দল থেকে বহিস্কার দাবী করছি”। স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাধারন সম্পাদক রিয়াজ শিকদার ও যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল বলেন, “ দলের বিরুদ্ধে বি এন পি কে খুশি করার মত এমন স্টাটাস দেয়ার জন্য তার বহিস্কার দাবী করছি”। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের কাছে জানার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিক ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।